পুষ্টিবিদরা মনে করেন, রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন চলে আসাতে শরীর মানিয়ে নিতে না পারায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই যতটা সম্ভব সুস্থ দেহে রোজা রাখার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা চাই কিছু বিশেষ খাবার। যেটি খেতেও সুস্বাদু এবং পুষ্টি-গুণেও ভরপুর। আজ সে রকম ৩টি রেসিপি জানিয়ে দেব রসনায়। চলুন দেখে নিই মজাদার ও পুষ্টিকর এ খাবারগুলো তৈরির প্রস্তুতপ্রণালি।
দই চিড়া
যা যা লাগবে
- মিষ্টি দই ১ কাপ
- চিড়া আধা কাপ
- পাকা কলা ১টি
- আপেল ১ কাপ
- লবণ ১ চিমটি
- চিনি বা মধু স্বাদমতো।
যেভাবে বানাবেন
প্রথমে চিড়া ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর একটি বাটিতে দই ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিন। ফেটানো দইয়ে চিড়া মেখে এক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। পরিবেশনের ঠিক ৫– ১০ মিনিট আগে আম ও কলার সঙ্গে দই-চিড়া চামচ দিয়ে মেশাতে হবে। তারপর আপেল ও কলার টুকরা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
উপকারিতা
সারা দিনের পানির চাহিদা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা মিটিয়ে শরীরকে তরতাজা করতে এ খাবারটি বেশ কার্যকর। সেই সঙ্গে বাড়াবে হজম প্রক্রিয়া ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া পেট ঠান্ডাকারী খাবার হিসেবে দই–চিড়ার জুড়ি নেই। চিড়ায় পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী।
ফ্রুট কাস্টার্ড
যা যা লাগবে
- দুধ ১ লিটার
- ডিমের কুসুম ২টি
- কাস্টার্ড পাউডার ৩ টেবিল চামচ
- চিনি স্বাদমতো
- কিশমিশ ২ টেবিল চামচ
- কাঠবাদাম ২ টেবিল চামচ
- পছন্দমতো ফল প্রায় ২ কাপ
- খেজুর কাটা ১/২ কাপ।
যেভাবে বানাবেন
প্রথমে ডিমের কুসুম দুটি একটি বাটিতে নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার কাস্টার্ড পাউডার দিয়ে ভালো করে মেশান এবং নরম মিশ্রণ তৈরি করুন। একটি পাত্রে দুধ নিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল দিন। দুধ একটু ঘন হয়ে এলে চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন। অল্প আঁচে ডিম এবং কাস্টার্ডের মিশ্রণটি দুধের সঙ্গে ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন। মিশ্রণটি একদম অল্প আঁচে রান্না করতে হবে এবং বিরতিহীনভাবে নাড়তে হবে, যাতে কাস্টার্ড জমে না যায়। কাস্টার্ড হালকা ফুটে উঠলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। তারপর ফ্রিজে রেখে পছন্দমতো ফল দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ফ্রুট
কাস্টার্ড।
উপকারিতা
যাদের ফল খেতে ভালো লাগে না, ফ্রুটস কাস্টার্ড তাদের ক্ষেত্রেও আনবে বৈচিত্র্য। নানান স্বাদের ও গুণের ফলে ভরপুর এ কাস্টার্ড সারা দিনের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। শরীরকে রাখবে ফিট। তাই চেষ্টা করবেন এ রমজানে প্রতিদিনের খাবার টেবিলে এটিকে রাখতে।
চিকেন সালাদ
যা যা লাগবে
মসলাপাতি
- হাড় ছাড়া মুরগির মাংস ১ কাপ
- ময়দা ২ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজবাটা ১ চা চামচ
- রসুনবাটা ১ চা চামচ
- লাল মরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ
- গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ
- অরিগানো ১/২ চা চামচ
- শুকনা মরিচ টালা গুঁড়ো অল্প
- টমেটো কেচাপ ১ টেবিল চামচ
- লবণ স্বাদমতো
- তেল ১ টেবিল চামচ
সালাদ
- শসা টুকরা/কুচি
- গাজর, টমেটো
- লেটুস কুচি ও ভাজা মচমচে নুডলস
- লেবুর রস
- অল্প অলিভ অয়েল
যেভাবে বানাবেন
তেল ছাড়া মাংসের সব উপকরণ মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে মেরিনেট করে রাখুন ১০ মিনিট। এক ঘণ্টা হলে আরও ভালো। প্রথমে প্যানে তেল দিয়ে তেল গরম হলে মেরিনেট করে রাখা মাংস দিয়ে মিডিয়াম আঁচে রান্না করুন। ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন। এখন সালাদের জন্য কেটে রাখা শসা, গাজর, টমেটো ,লেটুস কুচিতে অল্প লবণ, ভাজা মচমচে নুডলস, লেবুর রস আর অল্প অলিভ অয়েল দিয়ে মেখে নিন।প্লেটে পরিবেশনের সময় আগে মাখানো সালাদ সাজিয়ে নিন। এর ওপর রান্না করা মাংস ছড়িয়ে দিন। চাইলে কিছু ভাজা বাদাম ওপরে ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। এতে পরিবেশনটা দেখতেও ভালো লাগবে।
উপকারিতা
চিকেন সালাদ অত্যাধিক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাবার। এর আমিষ আপনার পেশির শক্তি বাড়িয়ে তুলবে এবং তাজা সবজি জোগান দেবে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের। এ গরমের রমজানে এই সালাদ আপনার শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।