ফুল শব্দটির সঙ্গে সৌন্দর্য আর সুমিষ্ট গন্ধ, এদুয়ের মেলবন্ধন যেন আষ্টেপৃষ্টে থাকে। প্রসাধনী থেকে শুরু করে নানাপ্রকার সুগন্ধী তৈরিতে ফুলের জুড়ি মেলা ভার। তাছাড়া নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও রয়েছে ফুলের নানাবিধ ব্যবহার। কিন্তু কখনো শুনেছেন কি, সৌন্দর্যের প্রতীক এই ফুলই ছড়াচ্ছে তীব্র কটু গন্ধ! যে ফুল ফুটলেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পচা মাংসের গন্ধ।
বলছি বিরল প্রজাতির ’পেনিস প্ল্যান্টের‘ কথা। দেখতে দর্শনীয় হলেও এই ফুল ফুটলেই ছড়িয়ে পড়ে পচা মাংসের গন্ধ। গত ১৯ অক্টোবর লেইডেন হর্টাস বোটানিকাসে ২৫ বছর পর ফুল ফুটতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইউরোপে এই নিয়ে তৃতীয় বার পেনিস গাছে ফুল ফুটতে দেখা গেল।
চুরুটের মতো গাছের আকার এবং অস্বাভাবিক গঠনের ফুলের কারণে এটি ‘পেনিস প্ল্যান্ট’ হিসেবে পরিচিত। তবে এর বৈজ্ঞানিক নাম আমোরফোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি। যার অর্থ- আকৃতি ছাড়া পুরুষাঙ্গ। একটু কল্পনা করলেই গাছে একটি পুরুষাঙ্গ দেখা সম্ভব। লম্বা দেহের ওপরে শিরাযুক্ত একটি অ্যারাম রয়েছে। আর মাঝখনে একটা সাদা ও মোটা স্প্যাডিক্স আছে।
এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে লেনডেন হটার্স বোটানিক্যাল গার্ডেনে পেনিস প্ল্যান্ট-এ ফুল ফোটার ঘটনা ঘটেছিল। একবার ফুল ফুটতে ২০ বছর বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে। ইউরোপের ইতিহাসে এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বারের মতো পেনিস প্ল্যান্ট গাছে ফুল ফোটার ঘটনা ঘটল।
এই গাছের আদি উৎপত্তিস্থল ইন্দোনেশিয়া ও জাভা অঞ্চল। নির্দিষ্ট পরিবেশ দরকার হয় বলে গাছটির পরিচর্যা করা অত্যন্ত কঠিন। আর কোনোভাবে গাছের পরিচর্যা করা গেলেও ফুল ফোটার ঘটনা খুবই বিরল।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, “স্ত্রী ফুল ফোটার পর তাপের কারণে স্প্যাডিক্স (ফুলের লম্বা আকৃতির অংশ) থেকে এক ধরনের পচা গন্ধ বের হয় যা পচনশীল মাংসের মতো। মাছি বা অন্যান্য পরাগবাহী কীট এ গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে কাছে ছুটে আসে। এরা গাছ থেকে পরাগ অন্য আমোরোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি গাছে নিয়ে যায়।”