• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ডেঙ্গুর ভয়াবহতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩, ০৩:১০ পিএম
ডেঙ্গুর ভয়াবহতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা
ফাইল ছবি

চলতি বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে সাড়ে ছয়শর বেশি মানুষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ আব্দেল মাহামুদ জানিয়েছেন, জলবায়ু সংকট এবং আবহাওয়ার অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে বাংলাদেশ ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ কবলে পড়েছে। এছাড়া, জলবায়ু সংকটের প্রভাব কী রকম ভয়াবহ হতে পারে— বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সেটি দেখিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এটি বিশ্ববাসীর জন্য একটি সতর্কবার্তা।

তিনি বলেছেন, ‘দেখা যাচ্ছে, এসব রোগের ভয়াবহ ভার বহন করছে আরও অনেক দেশ। জলবায়ু সংকট এবং বিশ্বব্যাপী শুরু হওয়া এল নিনো জলবায়ু প্যাটার্ন— যেটির কারণে উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া দেখা যায়— এটি পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে।’

ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে শুধু বাংলাদেশে খারাপ হয়েছে তা নয়।  দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতেও একই অবস্থা বিরাজমান। এই সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে তারাও। এমন কী, ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রও বাদ যায়নি বলে জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার বেশ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

অপরদিকে এশিয়ায় বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ লক্ষ্য করা গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এ বিষয়টি জলবায়ু সংকটের ভয়াবহতার একটি আগাম সতর্কতা। আর এই সংকট মোকাবিলা করতে বিশ্বের সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন’।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ট্রেডোস আধনম গেব্রেইয়েসুস বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৬৫০ জনের মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে এক মাসে অর্থাৎ আগস্টে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে প্রতি বছর দেখা যায়, তবে বর্ষার মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। কিন্তু বর্তমান বছর এপ্রিল থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর ওপর পর্যবেক্ষণ, ল্যাবের ক্ষমতা বৃদ্ধি, রোগ বিষয়ক ব্যবস্থাপনা, ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তারা সহায়তা করে আসছেন। ভবিষ্যতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং মাঠ পর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের মোতায়েন করেছি। এছাড়া, ডেঙ্গু পরীক্ষা এবং রোগীদের সহায়তাও করে আসছি।’

বাংলাদেশে এবার ডেঙ্গুর অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, ৬৪ জেলার সব জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখন ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে এবং রোগীর সংখ্যা কমে আসছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।

Link copied!