মে মাসের শুরুর পর থেকেই ফের ঘূর্ণিঝড়ের অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে বঙ্গোপসাগরে। মঙ্গলবার একটি নিম্নচাপ পুঞ্জীভূত হতে চলেছে বঙ্গোপসাগরে। ক্রমে তা শক্তি বাড়িয়ে সমতলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আগাম সতর্কতা জারি করেছে ভারতে আবহাওয়া দপ্তর।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৯ মে) দক্ষিণ-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হবে একটি লঘুচাপ। যেটি শক্তি সঞ্চয় করে ১০ মে ঘূর্ণিঝড় মোকায় পরিণত হবে। ১৪ মে ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। পূর্বাভাস সত্যি হলে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
তবে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন ‘মোখা’ রাখা হল তা নিয়ে বিশদ তথ্য সামনে এসেছে। আগামী ১৪ মে ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারাণা করা হচ্ছে। মূলত ‘মোখা’ শব্দটি এসেছে ইয়েমেনে ব্যবহৃত শব্দ থেকে। লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত ইয়েমেনে ‘মোখা’ নামে একটি সমুদ্রবন্দর শহর রয়েছে।
ইয়েমেনের এই মোখা শহর সারা বিশ্বের কাছে পরিচিতি কফির জন্য। কফির উৎপাদন এবং সারাবিশ্বে সরবরাহের কাজ করা হয় এই শহর থেকে। গত ২০০ বছর ধরে কফি সাম্রাজ্যে এই দেশ একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে চলেছে। বর্তমানে ‘মোখা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ-অতি উন্নতমানের কফি। যে কোনো ধরনের কফি, দুধ চিনি ও কোকোর স্বাদযুক্ত পানীয়। সাধারণত ভেড়ার চামড়া দিয়ে তৈরি দস্তানা বিশেষ এবং গাঢ় বাদামি রঙের জলপাই অর্থ প্রকাশেও ‘মোখা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
সেই অনুসারেই এই ঝড়ের নাম রাখা হয়েছে মোখা।
বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে ১৩টি দেশের সুপারিশ লাগে। বাংলাদেশসহ এই তালিকায় রয়েছে ভারত, ইয়েমেন, কাতার, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।
নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর এই ১৩টি দেশ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নাম সুপারিশ করা হয়। এমন ১৬৯টি নাম জমা পড়ে প্রতি বছর। ইংরেজিতে নামের হরফ ধরে, ক্রমানুযায়ী পালা আসে প্রত্যেক দেশের। এর পর যে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হবে, তার নাম হবে ‘বিপর্যর’, যার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ।
তবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র পাশাপাশি তামিলনাড়ু উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘মান্ডুস’ এর প্রকোপও মাথাচাড়া দিচ্ছে। ‘মান্ডুস’ নামটি রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ হল ‘সিন্দুকভর্তি ধনরাশি।’