ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের একমাত্র ‘ক্রিমিয়া সেতুতে’ সোমবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুজন নিহত হয়েছেন। এর আগে জরুরি পরিস্থিতি উল্লেখ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টের প্রধান এই ঘটনার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন। ক্রিমিয়া সেতুর ওপর ‘সন্ত্রাসী’ আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ইউক্রেনের একটি উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে ২০১৪ সালে দখল করে সংযুক্ত করে নিয়েছিল রাশিয়া। এরপর ২০১৮ সালে রাশিয়া এবং ক্রিমিয়ার মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগসংবলিত কার্চ সেতুটি তৈরি করা হয়। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য এই সেতুটি রাশিয়ার বাহিনীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘দায়িত্বহীন’ ও ‘নিষ্ঠুর’ হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে টেলিভিশনে এসে উপপ্রধানমন্ত্রী মারাত খুসনুলিন বলেছেন, ১ নভেম্বরের মধ্যে সেতুটির মেরামতকাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে।
রাশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় সেতুর ওপরের সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পাশেই যে রেললাইন রয়েছে, সেটির ক্ষতি হয়নি। সেতুটির সাপোর্ট ব্যবস্থা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এখনো ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।
ইউক্রেনকে দায়ী করে রাশিয়ার কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, আনম্যানড সার্ফেস ভ্যাসেল (ইউএসবি) ড্রোন (যা আকাশে নয়, বরং পানির ওপর দিয়ে চলে) দিয়ে সেতুটির ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। যদিও তাদের এমন দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ পায়নি বিবিসি।
তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র বিবিসি রাশিয়াকে জানিয়েছে, তারাই হামলা চালিয়েছে এবং পানিতে চলে, এমন ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
সোমবারের হামলার পর ক্রিমিয়া থেকে বের হওয়ার অন্য সড়কপথে ব্যাপক জ্যামের তৈরি হয় এবং অনেক রেল চলাচল বিলম্বিত হয়। সেতুর পাশাপাশি যে ফেরি চলাচল চালু রয়েছে, সেখানেও ব্যাপক জ্যামের তৈরি হয়।
ছুটি কাটাতে গিয়ে যারা ক্রিমিয়ায় আটকে পড়েছে, তাদের ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের অন্য যেসব এলাকা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে রয়েছে, সেদিন থেকে ফেরার জন্য পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়ার কর্মকর্তারা। এ জন্য কার্ফুর সময়সীমা কমিয়ে আনা হবে এবং সেনাবাহিনী পথঘাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজ করবে।
ইউক্রেনের রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ক্রিমিয়ায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ক্রিমিয়াতে রুশ প্রশাসনের প্রধান সের্গেই আকসিনভ টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, “ক্রিমিয়ার ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
আপনার মতামত লিখুন :