• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পিরিয়ডের সময় মুড সুইং কেন হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৩, ০২:০০ পিএম
পিরিয়ডের সময় মুড সুইং কেন হয়

বর্তমানে মুড সুইং বহুল প্রচলিত একটি শব্দ। তবে কেন হয় এই মুড সুইং অথবা মুড সুইং কী, এ ব্যাপারে অনেকেই সঠিক ধারণা রাখেন না। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এটি হতে পারে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটির প্রভাব বেশি। চলুন তাহলে জেনে আসি মুড সুইং কেন হয়।

বেশিরভাগ নারীই মুড সুইংয়ে আক্রান্ত হয়। একজন নারী হাসিমুখে কথা বলতে বলতে হঠাৎ মুড খারাপ হয়ে গেল,পরক্ষণেই আবার ঠিক হয়ে গেল, মনের এই হঠাৎ পরিবতর্নকেই সংক্ষেপে মুড সুইং বলে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে থেকে অনেক মেয়ের ক্ষেত্রেই কিছু মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়, যা খুব দ্রুত বদলাতে থাকে। প্রতি মাসের নির্দিষ্ট এই সময়ে অস্বস্তি, ক্রোধ, খিটখিটে মেজাজ থেকে শুরু করে মানসিকভাবে একদম ভেঙেও পড়তে পারে মেয়েরা।

মুড সুইং হওয়ার কারণ

মুড সুইংয়ের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা স্ত্রী হরমোনকেই দায়ী করে থাকেন। নারীদের পিরিয়ড সাইকেলকে কার্যক্রম অনুসারে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যার মধ্যে শেষ পর্যায়টিতে নারী পিএমএসে আক্রান্ত হন। এরপর শুরু হয় পিরিয়ড, অর্থাৎ নতুন সাইকেল বা চক্র। মেয়েদের শরীরে থাকা স্ত্রী হরমোনের নিঃসরণ মাসের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম পরিমাণে হয়। একটা পিরিয়ড শেষ হলে প্রধান ফিমেল হরমোন ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে। ১৪-১৫ দিনের মাথায় তা পৌঁছে যায় তার সর্বোচ্চ মাত্রায়। যাকে বলে ওভল্যুশন। এরপর তরতরিয়ে কমতে থাকে ইস্ট্রোজেন নিঃসরণ। আবার পরের পিরিয়ড শুরুর পর থেকে অল্প অল্প করে নিঃসরণ বাড়ে। ইস্ট্রোজেনের এই উত্থান-পতনই মেয়েদের মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলে এবং পিএমএসজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে।


কিছু গবেষণায় বলা হয়, নারীবিশেষ হরমোনগুলো কিছু ব্রেইন কেমিক্যালকে কমিয়ে মুডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সেরেটোনিন। এ বিষয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে চিকিৎসকেরা মনে করেন। বিএসএমএম ইউ এর ডাক্তার ইশিকা চৌধুরী বলেন, সেরেটোনিনের মাত্রা কমে গেলে হতাশা, বিষণ্নতা, অস্থিরতা তৈরি হয়। এ ছাড়া পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবেই একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম শারীরিক বা মানসিক লক্ষণ দেখা যায়। অনেকের ক্ষেত্রেই পেটের পেশিতে টান, খেতে অনিচ্ছা, শরীরে অস্বস্তি বা মাথাধরা ইত্যাদি জানান দেয়, এবার পিরিয়ড শুরু হবে। এ জন্যও অনেকের মুড সুইং হতে পারে।

  • কীভাবে বুঝবেন আপনার মুড সুইং হচ্ছে?
  • হঠাৎ রেগে যাওয়া।
  •  স্বাভাবিক বিষয়গুলোকে মেনে নিতে না পারা কিছুক্ষণ পরে আবার ঠিক হয়ে যাওয়া।
  • হঠাং আনন্দ অনুভব করে অল্প সময়ের মধ্যে আবার মন খারাপ হয়ে যাওয়া।
  • এসব লক্ষণ দেখা গেলেই বুঝবেন আপনার মুড সুইং হচ্ছে।হতাশ বা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া
  • অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া
  • থেকে থেকে কান্না পাওয়া
  •  উদ্বেগ বেড়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া।

পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়ঃ

মুড সুইংয়ের কোনো স্থায়ী সমাধান না থাকলেও নানাভাবে আপনি এই সমস্যাকে আয়ত্তে আনতে পারেন—

  •  নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
  •  সময় বেশ ভালো ভালো খাবার খাওয়া জরুরী। তবে এই সময়ে জাংক ফুড এবং ক্যাফেইন জাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো।

মুড সুইং আসলে এমন একটা জিনিস, যা আমাদের নজর এড়িয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায়, ভিকটিম নিজেই তার মুড সুইং সম্পর্কে অবহিত না। তবে নারী-পুরুষ উভয়েরই মুড সুইং সম্পর্কে জানা উচিত। এটিকে কখনোই মেয়েদের ন্যাকামি কিংবা মানসিক সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। বরং মেয়েটির প্রতি সদয় হয়ে তাকে এই সমস্যা থেকে বের করা আনার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

Link copied!