• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাত জাগলে যে ক্ষতি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
রাত জাগলে যে ক্ষতি
প্রতীকী ছবি

মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুম কম হলে বা রাত জাগলে সব কাজেই ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। মানসিক চাপ বেড়ে যায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। ঘুমের প্রয়োজন হলেও দিন দিন কম ঘুমানো মানুষের সংখ্যাই বাড়ছে। হ্যাঁ, ডিজিটাল যুগে মানুষের কাজের গতি যত বেড়েছে, ঘুমের ওপর ততই প্রভাব ফেলছে। যার তথ্য উঠে আসে বিভিন্ন গবেষণায়।

সম্প্রতি ঘুম নিয়ে ছোট্ট একটি জরিপ করেছেন একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক নারী গবেষক। আগের রাতে নিজের ঘুম না হওয়ার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তিনি ফেসবুকে জরিপের আয়োজন করেন। চলতি বছর ২০ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ঘুম নিয়ে ছোট ওই  জরিপে ফেসবুক বন্ধুদের কাছে জানতে চান, ‘আগের রাতে সবার ঘুম কেমন হয়েছে?’ সেই জরিপে অংশ নেন ৫৩ জন। যাদের মধ্যে ২৬ জন অর্থাৎ ৪৯ শতাংশই জানান তাদের ঘুমে সমস্যা ছিল এবং ঘুম পরিপূর্ণ হয়নি। এরপর নিজের অফিসের ১১ জন সহকর্মীর কাছেও একই বিষয় জানতে চান ওই নারী গবেষক। ৯ সহকর্মী জানান, তাদেরও ঘুম ভালো হয়নি, বা তারা রাত জেগেছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী ধরে নেওয়া যায়, বতর্মান সময়ে কম ঘুমানোর মানুষের সংখ্যাই বাড়ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই একটা সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে অনিদ্রা বা কম ঘুম।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, রাতে ঘুম ভালো না হলে তা কাজে প্রভাব ফেলে। পরের দিনটিও হয় বিশৃঙ্খল। কর্মকর্তারা অফিসের কাজে শিক্ষার্থী স্কুলে, চালকেরা গাড়ি চালানোর সময় ক্লান্ত বোধ করেন। ঘুম না হলে মনোযোগ নষ্ট হয়, স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায়, মেজাজ হয় খিটখিটে। একসময় হতাশা, বিষন্নতা ভর করে। এরপরই হতে পারে যেকোনো ধরণের দুর্ঘটনা।

এদিকে বিশ্বখ্যাত নেচার সাময়িকীর সায়েন্টেফিক রিপোর্টে বাংলাদেশের মানুষের ঘুম নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল। যেখানে উঠে আসে, মানুষের মধ্যে কম ঘুম হওয়ার সমস্যা  বেড়েছে করোনার সময়।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৯ হাজার ৭৩০ জনের ঘুমের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ওই গবেষণায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের ইউনিভর্সিটি কলেজ লন্ডনসহ চীন, সৌদি আরব, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মোট সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় ওই গবেষণায় যুক্ত ছিল। গবেষণায় দেখা যায়, ৬৪.৭ শতাংশ মানুষ রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমিয়েছে। রাতে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছে ২৯.৬ শতাংশ। আর ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমিয়েছে ৫.৭ শতাংশ মানুষ। এই ফলাফলকে গবেষকেরা ২০২০ সালের আগে করা অন্য এক গবেষণা ফলাফলের সঙ্গে তুলনা করেন। ওই গবেষণায় ৩ হাজার ৯৬৮ জনের ঘুমের তথ্য নেওয়া হয়। যার মধ্যে ৮৭.৪ শতাংশ মানুষ রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতেন। রাতে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমাতেন ৮.৯ শতাংশ মানুষ। আর ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমাতেন ৩.৭ শতাংশ মানুষ। দুই গবেষণার তুলনায় দেখা গেছে, দিন দিন কম সময় ঘুমানোর মানুষের সংখ্যাই বাড়ছে। যা করোনা মহামারির পর থেকে আরও বেড়েই চলেছে।

Link copied!