ঘুমের সঙ্গে শারীরিক সুস্থতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যারা বেশি রাত করে ঘুমান ও দেরি করে ওঠেন তাদের শরীরের মেটাবলিজম ঠিক থাকে না বলছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে এটিও ঠিক যে প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করতে পারলেই হলো। কিন্তু অনেকের মনে এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে। আসলে সুস্থ থাকার জন্য ঘুমানোর আদর্শ সময় কোনটি, আর কতক্ষণই বা ঘুমাতে হবে।
বিশ্বজুড়ে ১৫৩টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কম ঘুমের কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং মোটা হয়ে যাওয়ার সম্পর্ক আছে। ৫০ লাখ মানুষের ওপর এসব গবেষণা চালানো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, একটানা কয়েক রাত ঘুম কম হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ অনিদ্রা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
এছাড়া, ঘুম কম হলে ক্ষুধার তীব্রতা বাড়ে এবং এতে বেশি খাবারের চাহিদা তৈরি হয়। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিভ্রমও তৈরি হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন কম ঘুমানো মানুষ অর্থাৎ যারা রাতে ৬ ঘণ্টার কম সময় ঘুমান। অন্যদিকে বেশি ঘুমানো মানুষ, যারা ৯ বা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমান। তাদের ক্ষেত্রে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালের আগ পর্যন্ত প্রতি রাতে ১১ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। নবজাতকের জন্য প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যাদের বয়স ১৩-১৯ বছর তাদের প্রতিরাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
যুক্তরাজ্যের ৪ লাখ ৩৩ হাজার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে রাতজাগা মানুষের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার কারণে বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক জটিলতার শিকার হতে হয়।
রাত জাগার বদভ্যাস যারা গড়ে তুলেছেন, তাদের ৯০ শতাংশ বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির শিকার হন। ৩০ শতাংশের থাকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এ ছাড়া স্নায়ুবিক সমস্যা থেকে শুরু করে অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাই সুস্থ থাকলে হলে রাতের ৮ ঘন্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরি।