শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্তন্যপান করার উপর জোর দেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুর বুদ্ধির বিকাশ, শারীরিক সুস্থ গঠন নিশ্চিতে স্তন্যপান জরুরি। শুধু শিশু নয়, মায়ের মস্তিষ্কেও এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
সম্প্রতি ইভোলিউশন, মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ থেকে পাওয়া এক তথ্যে জানা যায়, স্তন্যপানে নারীদের মস্তিষ্কের একটা গভীর যোগাযোগ রয়েছে। যে নারীরা সন্তানকে স্তন্যপান করান তাদের মস্তিষ্কের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাকি নারীদের তুলনায় তাদের জ্ঞানের পরিধি মজবুত থাকে। বয়স ৫০ পার হলেও তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের তুলনায় বেশি সক্রিয় থাকে।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের লেখক মলি ফক্স বলছেন, 'স্তন্যপান শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী, তা আমরা জানি। শিশুদের স্বাস্থ্যের ওপর স্তন্যপানের প্রভাব সম্পর্কে অনেক তথ্যই আমরা জানি। কিন্তু স্তন্যপান নারীদের শরীরে কী প্রভাব ফেলে, সে সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না।'
লেখক আরও বলেন, 'সম্প্রতি এই বিষয়ের আমরা একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে নারীরা সন্তানকে স্তন্যপান করিয়েছেন, ৫০ বছর বয়সের পরও তাদের জ্ঞানের ভান্ডার একইরকম অটুট রয়েছে। অন্যদিকে যারা স্তন্যপান করাননি, তাদের তুলনায় ওই সব নারীদের মস্তিষ্ক অনেক উন্নত। অন্যান্য নারীদের তুলনায় ৫০ বছর বয়সের পরও জ্ঞানের চর্চার পরীক্ষায় তারা ভালো ফল করছেন।'
১১৫ জন নারী নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ১২ সপ্তাহ ধরে তাদের পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। এদের মধ্যে ৬৪ জনের মধ্যে অবসাদভাব লক্ষ্য করা যায় এবং ৫১ জনের মধ্যে কোনও অবসাদ ছিল না। অংশগ্রহণকারীদের বেশ কিছু সাইকোলজিক্যাল টেস্টও করা হয়। তারা কতটা পড়শোনা শিখতে পারছেন, কতটা মনে রাখতে পারছেন এবং কত তাড়াতাড়ি সব কিছু আয়ত্ত্ব করতে পারছেন-এসব বিষয়েও দেখা হয়। সব শেষে পর্যবেক্ষণের ফলাফল দেওয়া হয়।
সমীক্ষার শেষে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশ মহিলা যাদের মধ্যে অবসাদের লেশমাত্র ছিল না, তারা সন্তানদের স্তন্যপান করান। আর ৪৪ শতাংশ নারী যাদের মধ্যে অবসাদ লক্ষ্য করা যায়, তারা কখনও সন্তানকে স্তন্যপান করাননি।
গবেষণা শেষে সমীক্ষকরা বলেন, 'কগনিটিভ টেস্টের ক্ষেত্রেও যে নারীরা স্তন্যপান করিয়েছেন, তারা ভালো করেছেন। তারা দ্রুত শিখেছেন এবং সবকিছু মনেও রেখেছেন। সুতরাং সমীক্ষায় প্রমানিত হয় যে, স্তন্যপানের সঙ্গে নারীদের মস্তিষ্কের উন্নতি হয়।'
সূত্র: সিএনএন