হেলথ পলিসি ওয়াচের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস এক সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ই-মেইলের মাধ্যমে কর্মীদের জানান, পুতুলের ছুটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আরও জানান, সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথারিনা বেমে এসইএআরও-এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। মঙ্গলবার নয়দিল্লির আঞ্চলিক দপ্তরে তিনি যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি এসইএআরও আঞ্চলিক পরিচালক পদে নির্বাচনের সময় জাল কাগজপত্র ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তবে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিল—তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পক্ষে অনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছেন।
এর কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পুতুলের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে। দুদক জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে এবং মার্চে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।
দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান, পুতুল মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এই অপরাধ দণ্ডবিধির ৪৬৮ এবং ৪৭১ ধারা অনুযায়ী জালিয়াতি ও জাল কাগজপত্র ব্যবহারের মধ্যে পড়ে।
হেলথ পলিসি ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতুল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সম্মানসূচক পদে থাকার মিথ্যা দাবি করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মিথ্যা দাবির উদ্দেশ্য ছিল—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় উচ্চপদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা প্রমাণ করা।
দুদক আরও অভিযোগ করেছে, পুতুল তার ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহার করে ‘সুচনা ফাউন্ডেশন’-এর নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২৮ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছেন। যদিও এই অর্থ কীভাবে ব্যয় হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অভিযোগ দায়েরের পর থেকে পুতুল দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের কোনো দেশে ভ্রমণ করতে পারছেন না, কারণ বাংলাদেশে ফিরলে তার গ্রেপ্তারের ঝুঁকি রয়েছে।