ভাত ছাড়া বাঙালি চিন্তাই করতে পারে না। দিনের এক বেলা ভাত না হলে বাঙালিরা খাবারে যেন পূর্ণতাই পায় না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, ভাতের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ থাকে। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ভাত খেলে পেটও ভরা থাকে অনেকক্ষণ। তাই প্রতিদিন ভাত খাওয়া বাঙালির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানা যায়, ভাত আধা কাঁচা বা ভালোভাবে ফুটিয়ে না খেলে ক্যানসারে সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ইংল্যান্ডের বেলফাস্টে কুইনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অধ্যয়নে এই তথ্য উঠে আসে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ফসলকে পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে এবং বেশি পরিমাণে ভালো ফলনের জন্য রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা চালকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর করে তোলে। এই প্রক্রিয়ায় নানান ক্ষেত্রে আর্সেনিক বিষক্রিয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।
এছাড়া বিভিন্ন সময় চালের ওপর নানা সমীক্ষা করা হয়। এসব সমীক্ষায় উঠে আসে, ফসলে এই রাসায়নিক ব্যবহারে ফলে তৈরি আর্সেনিক বিষক্রিয়া ক্যানসারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
নব্বই দশকে ক্যালিফোর্নিয়া টিচার্স স্টাডিতে নারীদের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। এই সমীক্ষায় নারীদের স্তন ক্যানসারসহ নানা ধরনের ক্যানসারের সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়, যা নিয়মিত ভাত খাওয়া ফলেই হয়ে থাকে। সমীক্ষায় মোট ৯ হাজার ৪০০ জন অংশগ্রহণকারী নারীর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। স্তন ও ফুসফুসের ক্যানসারের রোগীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, আর্সেনিক একধরনের কেমিক্যাল। এতে নানা ধরনের খনিজের উপস্থিতি থাকে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনসেক্টিসাইডস ও পেস্টিসাইডসে এর ব্যবহার বেশি হয়। যা শরীরে গেলে বমি, পেটব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। পরে ক্যানসারে রূপ নেয়।
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, চালে আর্সেনিকের পরিমাণ অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। তাই এটি ভালোভাবে রান্না করতে হয়। তা না হলে শরীরে আর্সেনিক বিষক্রিয়া হতে পারে।
সমীক্ষায় ক্যানসার থেকে সুরক্ষার পাওয়ার বিষয়ে জানান বিশেষজ্ঞর। তাদের মতে, ভাত রান্নার আগে সারা রাত ভিজিয়ে রাখলে এর টক্সিক স্তর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া