• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

অভাব জয় করে যমজ বোনের ‘এ প্লাস’


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০১:২৭ পিএম
অভাব জয় করে যমজ বোনের ‘এ প্লাস’

সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক রোগী। নিজের বাড়ি ছাড়া সহায় সম্বল বলতে তেমন কিছুই নেই। টিউশনি করে কোনোরকম সংসার চালাচ্ছেন মা আসমা খাতুন। তবু লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া থেকে পিছপা হয়নি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল হাজীপাড়া গ্রামের যমজ দুই বোন সামিয়া খাতুন ও সাদিয়া খাতুন। শত প্রতিকূলতা কাটিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে দুই বোন।

সাদিয়া ও সামিয়া খাতুন জানান, বুদ্ধি হওয়ার পর বাবা আশরাফুল ইসলামের স্বাভাবিক আচরণ দেখেননি তারা। মা আসমা খাতুন তাদের সেই অভাব বুঝতে দেননি কখনো। যতটুকু পেরেছেন টিউশনি করে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কাঁধে নেন।

দুই বোন বলেন, মায়ের টিউশনিতে সংসারের খরচ মেটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই টিউশনি শুরু করি। টিউশনি থেকে যে অর্থ পাই, তাতে পড়ালেখার খরচ চলে কোনোমতে।

সামিয়া হতে চান চিকিৎসক। আর সাদিয়া চান প্রশাসন ক্যাডারে যেতে। নিজেদের এমন ফলাফলের পুরো কৃতিত্ব মা আসমা খাতুনকে দিতে চান তারা। বলেন, “মায়ের সদিচ্ছা ছাড়া এমন ফলাফল কখনোই সম্ভব ছিল না। তিনি কষ্ট করে আমাদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছেন।”

মা আসমা খাতুন জানান, মেয়েরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংসারে শুরু হয় আরও টানাপোড়েন। তিন মেয়ে। কোনো ছেলেসন্তান নেই। বড় মেয়ে নির্জনা আক্তার শনন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। সংকটের মধ্যেও সামিয়া ও সাদিয়ার পড়ালেখা চলে। নিজেরা টিউশনি করে নিজেদের খরচ জোগাত তারা।

সামিয়া-সাদিয়াদের মতো অদম্য এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানায় স্থানীয় প্রশাসন। মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, সামিয়া-সাদিয়া স্থানীয়দের অনুপ্রেরণা হতে পারে। অনেক প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে তারা এবারের এসএসসিতে যে সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এ ধরনের মেধাবীরা যাতে করে ঝরে না পড়ে, তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

Link copied!