• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

এবার সেলফি পরিবহনের চাপায় শিশুর মৃত্যু, আটক সাত বাস


সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ১০:২৭ এএম
এবার সেলফি পরিবহনের চাপায় শিশুর মৃত্যু, আটক সাত বাস

সাভারে এবার পরীক্ষা শেষে বাবা-মায়ের কাছে সাভারে বেড়াতে যাওয়ার সময় সেলফি পরিবহনের একটি বাসের চাপায় তাওহীদ (১০) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা সেলফি পরিবহনসহ আরও সাতটি বাস আটকে রেখেছেন।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা লাঙল মোড় এলাকায় আরিচাগামী লেনে এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত তাওহীদ পাবনা জেলার সাথিয়া থানার ফকিরপাড়া এলাকার মোস্তফার ছেলে। শিশুটির বাবা-মা সাভারে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তারা দম্পতি সাভাোর পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। 
নিহত শিশুর বাবা মোস্তফা জানান, চাকরির সুবাদে তারা সাভারে বসবাস করেন। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে গ্রামে দাদা-দাদির বাড়িতে থেকে সেখানে পড়াশোনা করত। বার্ষিক পরীক্ষার ছুটিতে গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে রাতে মা-বাবার কাছে বেড়াতে আসে তিন সন্তান। রাত ১১টার দিকে গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি থেকে নেমে তিন সন্তানকে নিয়ে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা সেলফি পরিবহনের একটি বাস তাওহীদকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে চাপা দিয়ে শিশু নিহতের ঘটনায় সেলফি পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের সাতটি বাস আটকে রেখেছে উত্তেজিত জনতা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাসগুলো আটক রয়েছে।

সাভার হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খালেক বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর উত্তেজিত জনতা ৬ থেকে ৭টি বাস আটক করেছে। স্থানীয়রা বলছে সেলফি পরিবহনের বাস তাকে চাপা দিয়েছে। কিন্তু  আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।

এর আগে,  ৭ ডিসেম্বর ধামরাইয়ে সেলফি পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে নিহত হন সাবেক জাবি শিক্ষার্থীসহ দুজন। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকটি বাস ক্যাম্পাসে এনে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেলফি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সমঝোতা হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। সেলফি পরিবহন আট লাখ টাকা দিয়েছে জাবির সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজের পরিবারকে। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫ লাখ টাকা দেয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া রুটে চলাচল করা এই পরিবহনের ২০০টি বাসের মধ্যে প্রতিদিন দেড় শতাধিক বাস সড়কে চলাচল করে। ৫-১০ মিনিট পরপর বাস গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সেলফি পরিবহন প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ।

গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে আশুলিয়া থেকে মোটরসাইকেলে মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে সেলফি পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষিতে সড়কে প্রাণ হারায় ১৬ বছর বয়সী শাহেরা আক্তার ওরফে শিলা।

২০২২ সালের জুলাইয়ে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় সেলফি পরিবহনের বাসের চাপায় মোটরসাইকেলের আরোহী দুই বন্ধু নিহত হন।

একই বছরের মে মাসে সেলফি পরিবহন ও জননী পরিবহনের দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘিওরের মুলজান এলাকায় সেলফি পরিবহনের এক যাত্রী নিহত ও উভয় বাসের অন্তত ২২ জন আহত হন।

একই মাসে ধামরাইয়ের ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডে উল্টো পথে ঢাকাগামী লেন ধরে পাটুরিয়ায় যেতে গিয়ে এক পথচারীকে ধাক্কা দিয়ে আহত করে সেলফি পরিবহনের বাস।

Link copied!