• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ইউএনওর সামনে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে গালিগালাজ ইউপি চেয়ারম্যানের


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২২, ০৩:৫২ পিএম
ইউএনওর সামনে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে গালিগালাজ ইউপি চেয়ারম্যানের

কক্সবাজারের মহেশখালীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সামনে এক রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হত্যা ও ধর্ষণ মামলার হুমকি দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে মহেশখালী থানায় জিডি করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) মহেশখালী দিনেশপুর বিটের অধীনে শাপলাপুর গোরকঘাটা সড়কের চিতারঝিরি ব্রিজের লাগোয়া এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর রাস্তা তৈরি করাতে বাধা দেন রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী ও তার অধীনস্থ সহকর্মী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাপলাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল খালেক চৌধুরী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি ও নারীদের লেলিয়ে দিয়ে ধর্ষণ মামলা দেওয়ার কথাও বলেন।

শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা রাজিব ইব্রাহিম ও দিনেশপুর বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুনায়েদ জানান, বন বিভাগের বাধা অমান্য করে পাহাড় ও বনের গাছ উজাড় করে রাস্তা তৈরি করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক চৌধুরী। পাহাড় কাটার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে রাস্তা নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে মূলত বন বিভাগ চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। বন ধ্বংস করে অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণ ও পানের বরজ করতে বন বিভাগ বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হন ইউপি চেয়ারম্যান। সরকারি সম্পদ রক্ষায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তাসহ বন বিভাগের লোকজন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত জিডিতে উল্লেখ করা হয় চরম হুমকিতে পড়েছে বন্য প্রাণী ও বনাঞ্চল। শুধু তা-ই নয়, বনের পাহারাদাররা রয়েছেন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায়। এভাবে গায়ের জোরে সড়কটি নির্মিত হলে শত বছরের গর্জনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে দাবি বনকর্মীদের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মহেশখালীর সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, “পাহাড় না থাকলে মহেশখালী দ্বীপের অস্তিত্ব থাকবে না।”

মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, “বনের ভেতর রাস্তা করার কোনো নিয়ম নেই। চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউএনওর সামনে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে একপর্যায়ে আমাকে ধমক দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। নারীসংক্রান্ত মামলা জড়িয়ে দেবেন।”

ইউএনও মো. ইয়াছিন বলেন, “আমি এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারব না।”

চেয়ারম্যান আবদুল খালেক জানান, রেঞ্জ কর্মকর্তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিনি। তিনি আমার বিরুদ্ধে জিডি করেছেন, তার অভিযোগ সত্য হলে এটি তদন্তে প্রমাণ হবে।”

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে মহেশখালী ও গোরকঘাটা রেঞ্জ। তাই উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবদুর রহমান জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত রয়েছেন। একজন চেয়ারম্যানের কাছে বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী এভাবে নাজেহাল হওয়া সত্যই দুঃখজনক। মহেশখালীতে বন বিভাগের কর্মকর্তা নাজেহাল হওয়া বা খুন হওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়।

২০২০ সালে উপজেলার হোয়ানক কেরুনতলী বিটের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ সরকারী বন রক্ষা করতে গিয়ে বনখেকোদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। তাই সরকারি কাজে বাধা দেওয়া একটি গর্হিত অপরাধ। 

Link copied!