• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল

পাত্তাই পেলো না নেপাল, অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৭:৫৫ পিএম
পাত্তাই পেলো না নেপাল, অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

পুরো ম্যাচে নেপালের উপর দাপট দেখালো বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে শক্তিমত্তায় কতটা এগিয়ে সেটাই যেন দেখিয়ে দিচ্ছিল শামসুন্নাহার-রিপারা। অন্যদিকে নেপাল প্রায় পুরো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশের আক্রমণ সামলাতে। দাপট দেখিয়েই নেপালকে হারিয়ে নারীদের অনূর্ধ্ব-২০ সাফ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় এসেছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে। স্বাগতিকদের পক্ষে গোল করেছেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার, শাহিদা আক্তার রিপা ও উন্নতি খাতুন।

ম্যাচের একদম শুরুতেই দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। দলীয় আক্রমণ প্রতিহত করতে গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন নেপালি গোলরক্ষক। তবে বিপদ পুরোপুরি মুক্ত করতে পারেননি তিনি।
ফিরতি বল পেয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশি ফুটবলার আকলিমা খাতুন। কিন্তু ফাঁকায় পেলেও গোলপোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি।

এরপর নেপালের অর্ধেই খেলা হয়েছে বেশি। বাংলাদেশের একের পর এক আক্রমণ সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছিল নেপালের রক্ষণভাগ।

ম্যাচের ১৭তম মিনিটে দারুণ এক দলীয় আক্রমণ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। অধিনায়ক শামসুন্নাহারের দারুণ পাস পেয়ে বক্সে ক্রস দিয়েছিলেন রিপা। কিন্তু সেই ক্রসে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি। আর তাতে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় স্বাগতিকদের।

একতরফা খেলায় বেশিরভাগ সময়েই দারুণ আক্রমণ সাজালেও মুখ থুবড়ে পড়েছে নেপালের রক্ষণে। বাংলাদেশের আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত নেপালও চেষ্টা করেছে আক্রমণ করার। কিন্তু স্বাগতিকদের রক্ষণভাগের সামনে পরিকল্পিত আক্রমণ করতে পারেনি তারা।

মনে হয়েছিল ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা নেপাল বাংলাদেশের বেশ পরীক্ষা নেবে। কিন্তু ফাইনাল মাঠে গড়াতেই পরিস্কার হয়ে গেল দুই দলের শক্তিমত্তার পার্থক্য।

ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে প্রথমবার দারুণ আক্রমণ সাজিয়েছিল নেপাল। বাঁ পাশ থেকে ওঠা আক্রমণ থেকে ক্রস পেয়ে শট নিলেও গোলপোস্টে রাখতে পারেননি নেপালি ফুটবলার আমিশা খারকি।
এক মিনিটের ব্যবধানে ডান পাশ বক্সের বাইরে দুর্দান্ত শট প্রতিহত করেন নেপালি গোলরক্ষক। তবে সবাইকে অবাক করে ওই বল কর্ণার না দিয়ে গোল শট দেন রেফারি।

বিরতিতে যাওয়ার আগে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। ৪২তম মিনিটে বক্সের ঠিক উপর থেকে দারুণ বাঁকানো শটে নেপালের জালে বল পাঠিয়ে দেন শাহিদা আক্তার রিপা।

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার। পাল্টা আক্রমণে নেপাল বল ক্লিয়ার করতে না পারলে প্রায় একক দক্ষতায় লক্ষ্যভেদ করেন স্বাগতিক অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ।

বিরতির পর শুরুতে নিজেদের গুছিয়ে নিতে একটু সময় নিচ্ছিল বাংলাদেশ। সেই সুযোগে কয়েকবার আক্রমণের চেষ্টা করলেও সুযোগ হাতছাড়া করে নেপাল।

৫৬তম মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ মিস করেন শামসুন্নাহার। ডান পাশ থেকে মারা ফ্রি কিকে আগোয়ান নেপালি গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট চলে যায় গোলপোস্টের উপর দিয়ে।
এ সময়ে নেপালি গোলরক্ষকের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে চিকিৎসা নিতে হয় দুজনকেই। তবে নেপালি গোলরক্ষক একটু বেশিই আঘাত পেয়েছিলেন, তার চিকিৎসা নিয়ে উঠে দাড়াতে সময়ও একটু বেশিই লেগেছে।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বারবারই ফিনিশিং ব্যর্থতায় একের পর এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। 
বেশ কয়েকবারই দূর থেকে শট নিয়েছিলেন শামসুন্নাহার-রিপারা। কিন্তু তাদের কোনো শটই লক্ষ্যে থাকেনি। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে একক দক্ষতায় বল নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন শামসুন্নাহার। কিন্তু তাকে থামিয়ে দেন আগোয়ান নেপালি গোলরক্ষক।
এক মিনিটের ব্যবধানে বাংলাদেশকে গোল হজমের হাত থেকে বাঁচান গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। ডি বক্সের ভিতর থেকে আমিশার মারা শট দারুণ দক্ষতায় কর্ণারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন তিনি।

৮২তম মিনিটে মাঝ মাঠের নীচ থেকে শামসুননাহারের পাস নিয়ে ডান পাশ থেকে একক দক্ষতায় বল নিয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন রিপা। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই ঠেকিয়ে দেন নেপালি গোলরক্ষক।

খেলার একদম শেষদিকে ব্যবধান বাড়ান উন্নতি খাতুন। ৮৬তম মিনিটে বক্সের ডান পাশ থেকে রিপার দুর্দান্ত ফ্রি কিক থেকে শরীর লাগিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

ম্যাচের শেষদিকে আক্রমণের ধার যেন আরও বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের একের পর এক আক্রমণে নেপালি রক্ষণভাগ খেই হারিয়ে ফেলছিল বারবার। গোল হজম করে শোধ করা তো দূরের কথা আর যেন গোল হজম না করতে হয় সেই চেষ্টাতেই যেন ব্যস্ত ছিল নেপাল।

শেষ পর্যন্ত আর ব্যবধান না বাড়লে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। চলতি আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো গোলাম রব্বানি ছোটনের দল।  

Link copied!