• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
বিপিএল

রান বন্যার ম্যাচে খুলনাকে উড়িয়ে দিলো চট্টগ্রাম


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ১০:০৫ পিএম
রান বন্যার ম্যাচে খুলনাকে উড়িয়ে দিলো চট্টগ্রাম
ছবি: সংগ্রহীত

প্রথমে ব্যাটিং করে চট্টগ্রামের বোলারদের তুলোধনা করেছিলেন খুলনা টাইগার্সের ব্যাটার আজম খান। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ১৭৮ রানের বড় সংগ্রহও পেয়েছিল তারা। তবে আজম খানের জবাবে যেন আরও ভয়ঙ্কর রুপে আবিভূর্ত হন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দুই ওপেনার উসমান খান ও ম্যাক্স ও‍‍`দাউদ। তবে দাউদ ফিফটি করে ফিরে গেলেও মিরপুরে সাইক্লোন উঠিয়ে উসমান তুলে নিয়েছেন দারুণ সেঞ্চুরি।

১৭৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতেনে তারা দু’জনে মিলে খুলনার বোলারদের নিয়ে স্রেফ ছেলেখেলা করেছেন। যাকে পেয়েছেন তাকেই পিটিয়েছেন। অনায়াসে একের পর এক চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ওপেনিং জুটিতে তুলেছেন ১৪১ রানের জুটি। আর এতে খুলনাকে ৯ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে আসরের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বন্দর নগরীর দলটি।

এর আগে সোমবার (৯ জানুয়ারি) প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুর দিকে যেন রান করতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন খুলনার ব্যাটাররা। প্রথম চার ওভারে ১২ রান যোগ হতেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে দলটি।

এরপর চারে নামা আজম খানকে নিয়ে প্রাথমিক চাপ সামলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল। তবে আজম খান যেখানে সাবলীলভাবে রান করছিলেন সেখানে অন্যপ্রান্তে তামিম যেন রীতিমতো রান করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।

মুখোমুখি হওয়া চতুর্থ ও পঞ্চম বলে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে শুরুতেই ঝড়ের পুর্বাভাস দিয়ে রেখেছিলেন আজম। তবে সেই ঝড় যে এত ভয়ঙ্কর হবে সেটা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি চট্টগ্রাম।

প্রথম ১০ ওভারে খুলনাএ সংগ্রহ ছিল দুই উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান। যেখানে  আজম খানের ব্যাট থেকে এসেছিল ২১ বলে ৩৩ রান। একপ্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং আর অন্যপ্রান্তে ছিল তামিমের অতি সাবধানী ব্যাটিং।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে বিদায় নেন তামিম। তার অস্বস্তিকর ইনিংসে এসেছে ৪০ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। এরপর ব্যাটিংয়ে দ্রুত বিদায় নেন খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলি।

এরপরই চট্টগ্রামের বোলার জন্য রুদ্রমূর্তিতে ধারণ করেন আজম। ইনিংসের ১৪তম ওভারে ফিফটি যখন ফিফটি স্পর্শ করেছেন তখন তার নামের পাশে খেলা বলের সংখ্যা ৩৩ বল।

এরপর পরের ফিফটি অর্থাৎ সেঞ্চুরি করতে আজম খেলেছেন মাত্র ২৫ বল। ১৫তম ওভারের শেষ দুই বলে টানা দুই ছক্কা মেরে শুরু। এরপর ১৬তম ওভারে দুই চার ও ১৭তম ওভারে এক চার ও এক ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি।

শেষ ওভারে সেঞ্চুরি করার জন্য আজমের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। ওভারে দ্বিতীয়  বলে সিঙ্গেল নিলে সেঞ্চুরি শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। তবে ওভারে চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে সে শঙ্কায় উড়িয়ে দেন।

পরের বলে দারুণ একা ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি করার পরের বলে বোলারের মাথার উপর দিয়ে আরও এক বিশাল ছক্কা মেরে ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে আজম খানের এটাই প্রথম সেঞ্চুরি আর বিপিএলে সব মিলিয়ে ২৬তম।

১৭৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো শুরু দরকার ছিল চট্টগ্রামের। তবে তাদের দুই ওপেনার উসমান খান ও ম্যাক্স ও‍‍`দাউদ শুধু ঝড়ো শুরুই এনে দেননি, জয়ের পথও তৈরি করেছেন।

প্রথম দুই ওভারে পাঁচ রান তোলার পর তৃতীয় ওভার থেকে চড়াও হওয়া শুরু করেন উসমান ও দাউদ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে দু’জনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৫০ রান।

ইনিংসের ১৩তম ওভারে ৩৪তম বল ফিফটি করেন উসমান। ফিফটি করার পর যেন চূড়ান্ত অগ্নিমূর্তি দেখান তিনি। এরপর মাত্র ২১ বলে দ্বিতীয় ফিফটি করেন তিনি। অর্থাৎ ৫৫ বলে শতক পূর্ণ করেন চট্টগ্রামের এই পাকিস্তানি ব্যাটার।

অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে একাদশে সুযোগ না পাওয়া দাউদ যেন এই ম্যাচেই তার শোধ মেটাতে চাইলেন। উসমানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাঁকিয়েছেন একের পর এক বাউন্ডারি।

চট্টগ্রামের দুই ওপেনারের তাণ্ডবে খুলনার বোলাররা যেন বারবার অসহায়ত্ব প্রকাশ করছিলেন। দলীয় ১৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। দাউদকে ফিরিয়ে খুলনাকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন নাহিদুল ইসলাম। ফেরার আগে ৫০ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।

তবে দাউদ ফেরায় মোটেও সমস্যা হয়নি চট্টগ্রামের। আর খুলনার খেলোয়াড়রাও দাউদের উইকেট নিয়ে উদযাপন করেননি। কারণ ততক্ষণে ম্যাচ চট্টগ্রামের কবজায়।

তিন নম্বরে নামা আফিফকে নিয়ে বাকি পথ অনায়াসে পার করেছেন উসমান। শেষ পর্যন্ত ১০৩ রানে। প্রথম ম্যাচ হারার পর আসরে এটাই চট্টগ্রামের প্রথম জয়। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও হার সঙ্গী হলো রুপসা পারের দলটির।

Link copied!