• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আরাভ খানের বাবা ছিলেন ফেরিওয়ালা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩, ০৪:৪২ পিএম
আরাভ খানের বাবা ছিলেন ফেরিওয়ালা

সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের। প্রতিদিন বেড়িয়ে আসছে কোনো না কোনো নতুন তথ্য। তবে তার জন্মস্থান ও তারিখ নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তিকর তথ্য। কেউ বলছেন তার জন্ম ১৯৯৩ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়, আবার কেউ বলছেন ১৯৮৮ সালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায়। তবে গণমাধ্যমে তার স্বর্ণের ব্যবসার বিষয়টি প্রকাশ হলে সমালোচনা শুরু হয় তার পরিবার নিয়ে। একজন দরিদ্র পরিবারের ছেলে এত অল্প সময়ে কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন।

জানা গেছে, আরাভ খান ওরফে সোহাগ মোল্লা বাগেরহাটের মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে। মতিয়ার রহমান মোল্লা বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতেন। জীবিকার তাগিদে একসময় তারা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় চলে আসেন। সেখানে বিলের মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন আরাভ খানের বাবা। পরে সেখানে জমি কিনে বাড়ি করেন। অভাব অনটনের সংসার হওয়ায় আরাভ খানকে পাঠিয়ে দেন আদি বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীতে। পরে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি সেখান থেকে ঢাকা চলে যান। ঢাকায় এসে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় মোল্লা আপন। জড়িয়ে পড়েন অপরাধ জগতে। ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা হয়। এরপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খান ভারতের কলকাতায় পালিয়ে যায়। সেখান থেকে সে চলে যায় দুবাইয়ে।

সরেজমিনে আশুতিয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সঙ্গে। তিনিও সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান অল্প দিনে এত টাকার মালিক হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ফেরদৌাস মোল্লা জানান, কিছু দিন আগে সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান তার দুই বোন ও মা বাবাকে দুবাই নিয়ে গেছে।

হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গত পাঁচ সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন এটা আমাদের বোধগম্য নয়।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমার থানায় এসেছে। কিন্তু তার কোনো হদিস আমরা পাইনি।

সম্প্রতি বাংলাদেশী তারকাদের নিয়ে দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’নামের একটি প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনের খবরের আলোচনায় আসেন মালিক আরাভ খান। মূলত তিনি বাংলাদেশের নাগরিক রবিউল ইসলাম। তবে ভারতে গিয়ে নাম পরিবর্তন করে রাখেন আরাভ খান।

পুলিশ বলছে, এ আরাভ খানই মূলত ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়া তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করলেন সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

Link copied!