• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জনকের স্বাধীন দেশে ফেরার দিন আজ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৪, ০৮:২৮ এএম
জনকের স্বাধীন দেশে ফেরার দিন আজ
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিনে জাতির প্রাণঢালা সংবর্ধনায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি।

আজ ১০ জানুয়ারি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানের কারাগারে ২৯০ দিন থাকার পর ১৯৭২ সালের এই দিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, এক অনন্য দিন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে আমাদের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, “দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ’’ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখব।”

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্বপরিকল্পিত বাঙালি নিধনযজ্ঞের নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাস্তবায়ন শুরু করে। লাখ লাখ নিরীহ বাঙালি জনগণের ওপর আক্রমণ ও গণহত্যা চালায় তারা। এই প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে তিনি সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই শুরু করার ডাক দেন। 
স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে আটকে রাখেন। এই কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে কাটে বঙ্গবন্ধুর ৯ মাস ১৪ দিনের কঠিন কারাজীবন। কারাগারে বন্দি করা হলেও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নামেই চলে মুক্তিযুদ্ধ।

১৯৭২ সালের এদিন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে নয়া দিল্লি থেকে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে নামেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফেরেন।

বঙ্গবন্ধুর অপেক্ষায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সেদিন হাজারো মানুষ ভিড় করেন। বঙ্গবন্ধুর গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পৌঁছতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। সেখানে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন তিনি।

কর্মসূচি

যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। 

আজ বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সকাল সাড়ে ছয়টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে আটটায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করবে।
 

Link copied!