কাঁচকলার স্বাস্থ্যগুণ অনেক। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। এছাড়া কাঁচকলা ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, কোলেস্টেরল কমায়। যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্যও এটি একটি চমৎকার বিকল্প। বিশেষজ্ঞরা জানান, কাঁচকলা ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা হজমেও সাহায্য করে। এটি কম গ্লাইসেমিক সূচক খাদ্য। যা শরীরে চিনির বৃদ্ধি ঘটায় না। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ ভালো। এছাড়া গ্যাস্ট্রিক আস্তরণের উন্নতি করে কাঁচকলা।
তাই কাঁচকলার খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে এটি কীভাবে খাবেন? কাঁচা তো খাওয়া সম্ভব নয়। তাই তরকারি বা বিভিন্ন পদ বানিয়ে খাওয়া যায় কাঁচকলা। তা ছাড়া রান্নায় কাঁচকলা যোগ হলে ভিন্ন স্বাদও এনে দেয়।
স্বাস্থ্যের জন্য় উপকারী কাঁচকলা রান্নার কিছু সহজ রেসিপি নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন।
কাঁচকলার ভাজা
কাঁচকলা ভেজে খেতে পারেন। বাচ্চারাও কাঁচকলা ভাজা বেশ পছন্দ করে। এগুলো বাইরে থেকে ক্রিস্পি, ভেতর থেকে হয় ক্রিমি। কাঁচা কলা ভাজার জন্য বেসন, মরিচের গুঁড়া, হিং, বেকিং সোডা, হলুদ গুঁড়া এবং লবণ একসঙ্গে বেন্ড করে নিন। ব্যাটার বানিয়ে রাখুন। এবার চুলায় পাত্র দিয়ে তেল গরম করে নিন। কাঁচকলার টুকরো ব্যাটারে ডুবিয়ে ডিপ ফ্রাই করে নিন। ভাজা হলে টিস্যু পেপারে তুলে রাখুন। এবার চাটনির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
কাঁচকলার কাবাব
এই কাঁচা কলা কাবাব বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা বিকেলে নাস্তার জন্য় বেশ ভালো। কলা কেটে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিন। এবারময়দা, কালো গোলমরিচ গুঁড়া, ধনে, বিট লবণ এবং কাঁচা মরিচের সঙ্গে সেদ্ধ কাঁচা কলা মাখিয়ে নিন। এবার সেই মিশ্রণ থেকে চ্যাপ্টা বা গোল বল বানিয়ে নিন। চুলায় তেল গরম করে নিন। চপগুলো সোনালি করে ভেজে নিন। ধনেপাতার চাটনি দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
কাঁচকলার কোফতা
কাঁচকলার কোফতা বেশ ক্রিস্পি এবং সুস্বাদু। কিছু কাঁচকলা সিদ্ধ করে ভালো করে মেখে নিন। এতে আদা বাটা, কাঁচা মরিচ, কাজু বাদাম কুঁচি, কালো গোলমরিচ গুঁড়া, ময়দা, জিরা গুঁড়া, পুদিনা পাতা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এগুলোকে তিন কোণা আকার দিন। এবার এগুলো গরম তেলে সোনালি রং করে ভেজে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন।
কাঁচকলার ভাজি
প্রথমে ব্লেন্ডারে কাঁচা মরিচ, রসুন, এবং আদার পেস্ট বানিয়ে নিন। কাঁচা কলাখোঁসা ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন। এগুলো টুকরো করে কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার সসপ্যানে তেল গরম করে জিরা ও সরিষা বাদামি করে ভেজে নিন। এরপর তাতে আদা-মরিচ-রসুনের পেস্ট এবং হলুদ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে কাঁচাকলা দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ভাজতে থাকুন। এবার কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি দিন, পেঁয়াজ বাদামি না হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। শেষে গরম মসলার গুঁড়া আর ধনেপাতা দিয়ে কম আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
কাঁচকলার তরকারি
কাঁচকলার তরকারিও বাঙালির প্রিয় খাবার। গরম ভাতের সঙ্গে কাঁচকলার তরকারি দিয়ে মাখিয়ে খেতে কিন্তু বেশ লাগে। কাঁচা কলার তরকারি রান্না করতে প্রথমে নারকেল , হলুদ, লাল মরিচের গুঁড়া এবং তেঁতুলের রস পানিতে গুলিয়ে নিন। এবার চুলায় একটি প্যানে পেঁয়াজ, লবণ, গরম মসলা, গুলিয়ে রাখা তেতুলের মিশ্রণ ও কাঁচা কলা দিয়ে রান্না করুন। মাঝারি আঁচে কলা সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন।