ভারতের গুজরাটের ভদোদরা জেলার পদরা তালুকায় গম্ভীরা-মুজপুর সেতুর একটি অংশ ধসে পড়ে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন। বুধবার (৯ জুলাই) সকালে ব্যস্ত সময়ে এই দুর্ঘটনায় কয়েকটি যানবাহন মাহিসাগর নদীতে পড়ে যায়। খবর এনডিটিভির।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেতুটি হঠাৎ ধসে পড়ার আগে একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। ঘটনার সময় চারটি যানবাহন (দুটি ট্রাক, একটি এসইউভি এবং একটি পিকআপ ভ্যান) সেতু পার হচ্ছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেড, স্থানীয় পুলিশ এবং ভদোদরা জেলা প্রশাসনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। এখন পর্যন্ত তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিধায়ক চৈতন্যসিং জালা দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রশাসন এলাকা ঘিরে ফেলেছে এবং সেতু ধসের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্বল অবস্থায় ছিল। এটি মধ্য গুজরাটের আনন্দ, ভদোদরা, ভরুচ ও অঙ্কলেশ্বরের যোগাযোগের প্রধান পথ হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এক বাসিন্দা বলেন, “গম্ভীরা সেতুটি শুধু দুর্ঘটনার জন্যই নয়, আত্মহত্যার স্থান হিসেবেও পরিচিত হয়ে উঠেছে। বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কিছু করেনি।”
জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা অমিত চাভদা এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলেন, “আনন্দ ও ভদোদরা জেলাকে সংযুক্ত করা প্রধান গম্ভীরা সেতুটি ধসে পড়েছে। অনেক যানবাহন নদীতে পড়েছে, বহু হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের দ্রুত উদ্ধার কাজ ও বিকল্প রুট চালু করা উচিত।”
ঘটনার পর এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “গুজরাটের ভদোদরা জেলায় সেতু ধসে মানুষের প্রাণহানি গভীরভাবে মর্মান্তিক। যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (পিএমও) জানায়, প্রতিটি নিহতের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া, আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে।
এদিকে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল গম্ভীরা সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক্সে জানান, “আনন্দ ও ভদোদরার সংযোগকারী গম্ভীরা ব্রিজের একটি স্প্যান ভেঙে পড়ার কারণে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা হৃদয়কে বিদীর্ণ করে। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের পাশে সহমর্মিতার সঙ্গে দাঁড়িয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি নিহতের পরিবারের জন্য ৪ লাখ রুপি করে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এছাড়াও আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়। আহতদের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয় রাজ্য সরকার বহন করবে বলেও জানানো হয়েছে।