• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ঘূর্ণিঝড় কত রকমের হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম
ঘূর্ণিঝড় কত রকমের হয়

সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির বেশি হলে সেই অঞ্চলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের পানি বাষ্পীভূত হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায় এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের ওপর একটি বায়ুশূন্য স্থানের সৃষ্টি হয়। সেই শূন্যস্থান কে পূরণ করতে পারিপার্শ্বিক শীতল ও ভারী বাতাস সেই অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। এই দ্রুত ছুটে আসা ঠান্ডা বাতাস ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম দেয়।

বাতাসের এই গতিবেগ অনুসারে চারটি ভাগ আছে ঘূর্ণিঝড়ের। যে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত হয় তাদের বলা হয় ট্রপিক্যাল সাইক্লোন। ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার গতিবেগ সম্পন্ন ঝড়কে বলা হয় সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম।

আবার ঝড়ের গতিবেগ আরও একটু বেড়ে ১১৮ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হলে তাকে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। ১৬৬ থেকে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগ হলে ঝড়ের উপাধি হয় এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম।

ঘূর্ণিঝড়ের গঠন
দুই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রেই কিছু গঠনমূলক বৈশিষ্ট্য একই থাকে। তবে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের থেকে ক্রান্তীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের 
গতিবেগ বেশি হয়। ঘূর্ণিঝড়ের সাধারণত যে গঠনমূলক বৈশিষ্ট্যগুলো আছে সেগুলো হলো-

ঘূর্ণিঝড়ের ঝড়ের চোখ
এটি কেন্দ্রের চারপাশে মূলত কিউমুলোনিম্বাস মেঘের যে আস্তরন তৈরি হয়, তাকে মেঘের দেয়াল বলা হয়। এটির ব্যাসার্ধ ১০-১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। চোখ ওপরে গেলে ঝড়ের গতিবেগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

মেঘের দেওয়াল
মেঘের দেয়ালের অঞ্চলে ঝড়ের গতিবেগ সর্বাধিক থাকে। ১০-২০ কিলোমিটার পর্যন্ত এটি বিস্তৃত হতে পারে তবে এই অংশটি যেখানে প্রভাব বিস্তার করে সেখানে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।

স্পাইরাল ব্যান্ড
মেঘের দেয়ালকে ঘিরে থাকে দুটি স্পাইরাল ব্যান্ড। মেঘের দেওয়ালের চারদিকে  দুটি স্পাইরাল ব্যান্ড থাকে যাকে উপগ্রহ থেকে দেখলে ছোটখাটো গ্যালাক্সি মনে হয়। এটি বেশ কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হতে পারে। এই অঞ্চলের প্রভাব স্থলভাগে যেখানে পড়ে সেখানে বৃষ্টিপাত ঘটায় সেই কারণে এটির আরেক নাম রেইন ব্যান্ড।

বহিঃসীমা অঞ্চল
এটি ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বাইরের অঞ্চল। যখন কোনো ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করে তখন সবার আগে এই অঞ্চলের প্রভাব পরে। এটিকে ঘূর্ণিঝড়ের সীমানাও বলা যায়।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রকারভেদ

১. ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার থাকলে তাকে সেটিকে ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলে।
২.ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার থাকলে তাকে সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বলে।
৩.ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার থাকলে তাকে বলা হয় ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম।
৪. ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ থেকে ২২০ কিলোমিটার হলে তাকে বলা হয় এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম।
৫. ঝড়ের গতিবেগ ২২০ কিলোমিটারের অধিক হলে বলা হয় সুপার সাইক্লোন ।

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ভয়ঙ্কর হওয়ার কারণ
বঙ্গোপসাগর খুবই উষ্ণ যা সাইক্লোনকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলতে সাহায্য করে। বিশ্বের অন্যান্য উপকূলের চাইতে বঙ্গোপসাগরে জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে ঘনবসতি ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়।

Link copied!