বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের যেমন নাড়ির সম্পর্ক, তেমনি শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রেরও আত্মার সম্পর্ক। শিক্ষকরা আমাদের আত্মবোধ গড়ে দেন। তারাই আমাদের বোধহীন জীবনকে সঠিকভঅবে আত্মস্থ করতে শেখান। জ্ঞানহীন মানুষ যদি পশুর সমান হয়ে থাকে, সেই মানুষের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দেন একজন আদর্শবান শিক্ষক।
পিতা-মাতা-সন্তানের সম্পর্কের মতো ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক এক অবিচ্ছেদ্য সুন্দর সম্পর্ক। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক হওয়া উচিত অভিভাবক ও বন্ধুসুলভ। শিক্ষকরা প্রথমে হবেন অভিভাবক, তারপর বন্ধু। তবে সেই বন্ধুত্বের মধ্যে সীমারেখা থাকা উচিত। আসলে ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে সম্পর্ক হওয়া উচিত ‘ফ্রেন্ডলি’; তবে ‘ফ্রেন্ড’ নয়। ফলে অভিভাবক ও বন্ধুত্বের একটি মিশ্রণ থাকবে শিক্ষকের আচরণের মাঝে। শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক হতে হবে পাত্র ও পানির মতো। পাত্র ছাড়া যেমন পানি সংরক্ষণ সম্ভব নয়, তেমনি শিক্ষক-ছাত্র সুসম্পর্ক ছাড়া জ্ঞানার্জন বিতরণও অসম্ভব। একজন শিক্ষকই শিক্ষার্থীর জ্ঞানার্জনের পেছনে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জোগায়, স্বপ্ন দেখায়।
মানুষের জীবনে পিতামাতার পরই শিক্ষকের অবস্থান। তবুও একজন শিক্ষক আমাদের কাছে পিতামাতার সমতুল্য। ছাত্র-শিক্ষকের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্পর্ক হাজার বছর ধরে চলে আসছে। শুধু শিক্ষা কিংবা জ্ঞানার্জন নয়, একজন ছাত্রের দুর্দিনে ছায়ার মতো পাশে দাঁড়ান একজন শিক্ষক। আমাদের সংস্কৃতিতে শিক্ষক-ছাত্রের মধ্যে রয়েছে এক আশ্চর্য সেতুবন্ধন। যে বন্ধন কেবল পারস্পরিক স্নেহ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর বিশ্বাসের ওপর গড়ে ওঠে। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক এক অদ্ভূতরকম শক্ত গাঁথুনির।