• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫

টাকা বাঁচানোর কিছু কৌশল


ইশতিয়াক হোসেন
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২২, ০৩:৩৫ পিএম
টাকা বাঁচানোর কিছু কৌশল

ধনী হওয়ার স্বপ্ন লালন করেন সবাই। কিন্তু কয় জন পারেন সেই স্বপ্নের ধারের কাছে পৌঁছাতে। সীমিত আয়ের বিপরীতে দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির এই সময়ে আবারও দুর্ভিক্ষের হাত ছানি দিচ্ছে। এই অবস্থায় ধনী হওয়া দূরের কথা বেঁচে থাকাও কঠিন। আশার কথা হলো, এই কঠিন সময়ে কিছু ছোট পদক্ষেপ আমাদের হয়তো  ধনী বানাবে না, তবে কিছু টাকা সাশ্রয় করা যাবে। যে পদক্ষেপগুলো আমাদের মিতব্যয়ী হতে সহায়তা করবে সেগুলো জেনে নিন।
 

বেঁচে যাওয়া সদাই পাতি

অনেকেই অভ্যাস বসত সাপ্তাহিক বা দৈনন্দিন বাজার করে। অনেক সময় দেখা যায়, ফ্রিজ অথবা রান্নাঘরে অনেকটা বাজার বাকী থাকতেই আবারও বাজার করে। জমে থাকা এসব কাঁচা বাজার রান্না করে শেষ করে ফেলুন। নয়তো এগুলো নষ্ট হয়ে আপনার অনেকটা কষ্টার্জিত টাকাও অপচয় হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা করে সপ্তাহভিত্তিক বাজার করুন। প্রতিদিন ছোট ছোট প্রয়োজনে বাজার করলে আপনার মূল্যবান সময় আপচয় হয়। সেই সঙ্গে বাজারে যাওয়া আসার খরচ বাড়ে। 
 

ক্যাবল টিভি লাইন

স্মার্ট টিভির যুগে ক্যাবল টিভি অনেকটা পুরাতন মাধ্যমে পরিণত হয়ে গেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিভিতেই বিভিন্ন ভিডিও দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া দেশ বিদেশের টিভি চ্যানেলগুলোও ইন্টারনেট দিয়ে উপভোগ করা যাচ্ছে। কাজেই খরচ কমাতে কেবল টিভি লাইন সংযোগটি বন্ধ করে দিতে পারেন।
 

সাধ্যমতো খরচ

আপনার মাসিক আয় অনুযায়ী ব্যয় করুন। অর্থাৎ আপনার আয় যাই হোক না কেন এর সম্পূর্ণ খরচ করা যাবে না। মাস শেষে হাতে কিছু টাকা বাঁচিয়ে রাখুন। এই বাঁচানো টাকা এক সময় বড় সঞ্চয়ে পরিণত হবে।
 

নামহীন পণ্য ক্রয়

শুনতে যতটা মন্দ লাগছে বাস্তবে অনেকটা উপকারী। যেমন নামকরা কোনও প্রস্তুতকারীর পণ্য অনেক দাম দিয়ে না কিনে অপেক্ষাকৃত কম দামের কিন্তু টেকসই নামহীন পণ্য আপনার অনেকগুলো টাকা বাঁচিয়ে দিবে। অনেক সময় দেখা যায় এ সব নামহীন পণ্য ভালো মানের পন্যের মতোই আকর্ষণীয় ও টেক সই হয়।
 

বিদ্যুত্ বিল

বিদ্যুতের দাম বিভিন্ন সময় ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন, রাত ১১ থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত অফ পিক সময় থাকে। আর বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পিক সময় থাকে। মানে বিকেল ৫ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেশি থাকে। এ সময় সব ভাড়ি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার যথা সম্ভব পরিহার করে আপনার কষ্টার্জিত অর্থ বাঁচান।
 

বাসার খাবার

কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন অথবা কেনাকাটা করতে গিয়ে বাইরে থেকে কিছু কিনে খেয়ে নিচ্ছেন। একবার ভাবুন বাইরের খাবারের থেকে বাসায় প্রস্তুত করা খাবার আপনার কতটা খরচ কমিয়ে দিতে পারে। তাছাড়া নিজের রান্না করা খাবার স্বাস্থ্যকর হয়।

নগদ টাকা

আধুনিককালে নগদ টাকার পরিবর্তে অন্যভাবে মূল্য পরিশোধ করা যায়। যেমন মোবাইল ব্যাঙ্কিং, ক্রেডিট ডেবিট কার্ড ইত্যাদি। কিন্তু এসব ইলেক্ট্রনিক লেনদেন পদ্ধতি সেবার জন্য টাকা কেটে রাখে। আপনার অজান্তেই অনেকগুলো টাকা বাড়তি খরচ হয়ে যায়। কাজেই যেকোনও প্রকার লেনদেন নগদ টাকা ব্যবহার করুন।
 

হোম ডেলিভারি

ব্যস্ত জীবনে বাজার সদাই করার সময় বের করা কঠিন। তাই কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে জামা কাপড় সব কিছুই হোম ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব। কিছু হোম ডেলিভারি সেবা আছে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ এই সেবার জন্য টাকা কেটে রাখে। কষ্ট হলেও নিজে গিয়ে বাজার থেকে পণ্য কিনে আনুন টাকা বাঁচান।
 

তুলনা পরিহার করুন

আপনার আয়, অভ্যাস, কেনাকাটা ইত্যাদি অন্যের সঙ্গে তুলনা করা পরিহার করুন। পরিচিত অনেকেই হয়ত আপনার থেকে অনেক বেশি আয় ব্যয় করে। সেই অনুযায়ী আপনি নিজের সঙ্গে তুলনা করলে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় খরচ বাড়বে। ফলে সঞ্চয় করা ব্যাহত হবে।
 

রক্ষণাবেক্ষন

দৈনন্দিন ব্যবহার্য অনেক জিনিসপত্র প্রায়ই অকেজ বা নষ্ট হয়ে যায়। এর কিছু আছে যেগুলো মিস্ত্রি দিয়ে ঠিক করা লাগে। আবার কিছু আছে নিজে চেষ্টা করলেই মেরামত করা যায়। কাজেই অল্পতেই মিস্ত্রির পেছনে টাকা নষ্ট না করে নিজেই মেরামতের কাজটি করে ফেলুন।
 

অতিরিক্ত পণ্য ক্রয়

অনেক সময় কিছু প্রস্তুতকারক বা বড় চেইন শপ বিভিন্ন প্রকার অফার দিয়ে থাকে। যেমন একটির সঙ্গে  একটি ফ্রি বা ২টি কিনলে একটি ফ্রি। আবার পণ্য বেশি পরিমাণ কিনলে কিছু টাকা ছাড় দেওয়া হয়। এ ধরনের সুযোগ নিন। এতে মাস শেষে হাতে বেশ কিছু টাকা বেঁচে যাবে।
 

ব্যবহৃত পণ্য

বাসাবাড়িতে অনেক জিনিসপত্র থাকে যেগুলো আর সেভাবে প্রয়োজন পরে না বা ব্যবহার হয় না। এসব  জিনিসপত্র বিক্রি করে দিন। আবার কোনও জিনিস অত্যন্ত প্রয়োজন। যেটার দাম অনেক বেশি অথচ আপনার পরিচিত কারও কাছে হয়তো আছে। প্রয়োজনে তার কাছ থেকে নিয়ে প্রয়োজন মেটাতে পারেন। চাইলে কম দামেও কিনে নিতে পারেন।
 

পরিশেষে আপনার মাসিক খরচপাতির অবশ্যই হিসাব রাখুন। অতিরিক্ত খরচ পরিহার করুন। এভাবে আর্থিক সংকটের সময় বিপদ এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। উপরন্তু এ অভ্যাস আপনাকে হয়ত একদিন ধনীদের তালিকায় নিয়ে আসবে।

Link copied!