মুড সুইং কি
মুড সুইং সম্পর্কে আমাদের দেশে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণির মধ্যে টুকটুাক আলোচনা হলেও এখন পযর্ন্ত উল্লেখযোগ্য কোন কার্যক্রম নেই। অথচ মুড সুইংয়ের কারণে সৃষ্টি হতে পারে অনেক বড় কোন বিপদ। সম্পর্ক নষ্ট থেকে শুরু করে আত্মহত্যার প্রবণতাও তৈরি হতে পারে। আমরা জানিই না যে, কর্মব্যস্ত এই সময়ে সবাই মুড সুইংয়ের সমস্যায় পড়ি। কেউ হয়তো কম, কেউ বেশি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনটা খুব ভালো ছিল, হঠাৎ করেই মন খারাপ! জানা নেই কেন খারাপ হলো মন। আবার হুট করে রেগেও গেলেন। এর মানে হলো আপনার ঘনঘন মেজাজ পরিবর্তন হয়। যাকে বলা হয় মুড সুইং।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ঘনঘন মেজাজ পরিবর্তন বা মুড সুইং হয় তাদের মস্তিষ্ক খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এমনকি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বা কোনো পরিকল্পনা করতে পারে তাৎক্ষণিক। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলো, এটা সবার ক্ষেত্রে এক হয় না। বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই বারবার মেজাজ পরিবর্তন হওয়ার ফলাফল খুবই বিপজ্জনক।
মনোবিদরা বলছেন, শুরুর দিকেই মুড সুইংয়ের সমস্যার সমাধান না করতে পারলে, তা বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা দ্বৈত স্বত্বার মতো জটিল ও গভীর মানসিক রোগে পরিণত হতে পারে।
কী কী কারণে হয়?
মস্তিষ্কে কয়েকটি নিউরোট্রান্সমিটার থাকে। যা থেকে হরমোন ক্ষরণ হয়। হরমোনের মধ্য়ে সেরোটোনিন ও নরপাইনফ্রাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমটি আমাদের ঘুমের ধরণ, নানা রকমের মানসিক স্থিতি ও আবেগের ওঠাপড়ার সঙ্গে জড়িত। আর দ্বিতীয়টির সম্পর্ক স্মৃতি, কোনো কিছু শেখার দক্ষতা ও শারীরিক চাহিদার সঙ্গে। এই হরমোনের তারতম্যের কারণে মুড সুইং হতে পারে।
এ ছাড়াও মানসিক চাপ, অ্যাংজাইটি, অবসাদ বা ডিপ্রেশান, মদ্যপান, ঘুমের অভাব, বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা দ্বৈত সত্ত্বা, কাজের চাপসহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে মুড সুইং।
নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
১. পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। দৈনিক অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা।
২. প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করতে হবে।
৩. সঠিক ডায়েট মেনে চলুন।
৪. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে।
৫. পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
৬. সম্ভব হলে মেডিটেশন করবেন নিয়মিত। তাতে মন শান্ত থাকবে।
মুড সুইংয়ের কারণে অতিরিক্ত রাগ কিংবা নেতিবাচক অনুভূতি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে। যদি এ সমস্যা বেশি হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।