• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

প্রিডায়াবেটিস কী?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৩, ০১:৫২ পিএম
প্রিডায়াবেটিস কী?

ডায়াবেটিস হওয়ার আগের অবস্থাকে বলে প্রিডায়াবেটিস। শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করার অবস্থায় না থাকলে ধরে নেওয়া হয় ডায়াবেটিস হয়েছে। পরিপাক-রস নিঃসরণকারী গ্রন্থি ‘প্যানক্রিয়াস’ বা অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত করে রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে। 

দেহের সব কোষের জন্য গ্লুকোজের দরকার হয়। হেল্থডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রিডায়াবেটিস হওয়ার সব কারণ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলেও কিছু বিষয় আয়ত্তে রাখা যায়। এই ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিবর্তন করা জরুরি, যাতে পরে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে না হয়।

লক্ষণ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। এমনকি প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বুঝতেই পারে না তার প্রিডায়াবেটিস হয়ে আছে। তবে কিছু লক্ষণ দেখে বোঝার উপায় রয়েছে। যেমন বাহুমূলে বা ঘাড়ে কালচে চামড়া তৈরি হাওয়া।

কারণ
বিভিন্ন কারণে প্রিডায়াবেটিস হতে পারে। কারও কারও ইনসুলিন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হয়। মানে হলো, পেশি, চর্বি ও যকৃতের কোষ ইনসুলিনের প্রতি সাড়া দেয় না ফলে রক্তের শর্করা ব্যবহারে দেহের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ করতে অগ্নাশয় আরও বেশি ইনসুলিন তৈরি করা শুরু করে।

অগ্ন্যাশয়ের কোষ (বেটা সেলস) পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপন্ন করতে পারে না। যখন ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ করে না বা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না তখন গ্লুকোজ বা শর্করা রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় থেকে যায়, যাকে বলা হচ্ছে প্রিডায়েবেটিস। আর এই অবস্থা থেকে হতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস।

কাদের ঝুঁকি বেশি

বংশগতি ছাড়াও জীবনযাত্রার পদ্ধতির কারণে প্রিডায়াবেটেস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এর মধ্যে রয়েছে-

  • স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন
  • বয়স ৪৫-এর ওপরে হলে
  • বাবা-মা বা ভাই-বোনদের কারও ডায়াবেটিস থাকে
  • শারীরিকভাবে অলস জীবন যাপন
  • শারীরিক সমস্যা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ কোলেস্টেরল
  • পারিবারিক ইতিহাসে হৃদরোগ বা স্ট্রোক থাকা
  • বিপাকপ্রক্রিয়াতে সমস্যা
  • পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রম (পিসিওএস) থাকা

প্রতিরোধ ব্যবস্থা

প্রিডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রিডাবেটিসের ঝুঁকি কমাতে যা করা উচিত তা হলো-

  • স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে হবে। স্থূলতা টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে একজনের গড় ওজনও অতিরিক্ত ওজন হতে পারে, যা থেকে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভ্যস্ত হতে পাবে। যেমন প্রচুর পরিমাণে ‘নন-স্টারর্চি’ বা শ্বেতসারহীন সবজি খেতে হবে, খাবার ও পানীয়তে চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। এড়াতে হবে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার।
  • শারীরিকভাবে কর্মচঞ্চল থাকতে হবে। সাধারণভাবে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট বা সপ্তাহের অন্তত পাঁচ দিন দৈনিক ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ব্যায়াম দেহের কোষকলার মাঝে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ায়, মানে রক্তপ্রবাহ থেকে আরও ভালোভাবে শর্করা অপসারণ করতে পারে।
  • ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ছাড়তে হবে। আর না থাকলে তো কথাই নেই, ধরা যাবে না। ধূমপান ধমনি, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুসসহ নানান অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব রাখে।
  • জীবনযাত্রার পদ্ধতি এভাবে পরিবর্তনের মাধ্যমে সময়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রিডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগ হওয়ার হাত বাঁচা সম্ভব হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে এসব কাজ করে না তখন ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। আর এই বিষয়ে একজনই চিকিৎসকই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
Link copied!