গ্রীষ্মকালীন ফলগুলোর মধ্যে জাম একটি সুস্বাদু, রসালো এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল। কালচে বেগুনি রঙের এই ছোট ফলটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতে তেমনই মিষ্টি টক। তবে শুধু স্বাদেই নয়, জাম খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়।
চলুন জেনে নিই, জাম খেলে শরীরে কী কী পরিবর্তন ঘটে এবং এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
জাম ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে "জামবোলিন" নামক একটি বিশেষ যৌগ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। জাম খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে এবং অতিরিক্ত গ্লুকোজ শোষণ কমে যায়।
বিশেষ করে জাম বিচির গুঁড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেকেই ব্যবহার করেন।
হজমশক্তি বাড়ায় ও পেটের সমস্যা দূর করে
জাম ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত জাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের সমস্যা কমে। এছাড়া এতে থাকা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদান ডায়রিয়া ও পেটের ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করে।
রক্ত পরিশোধন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, বিশেষ করে ভিটামিন সি এবং ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় উপাদান এতে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এগুলো শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালস কমিয়ে দেয়। যা ক্যানসার প্রতিরোধসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
জাম রক্ত বিশুদ্ধ করতেও সাহায্য করে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সহায়ক।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
জামে পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, যা হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং কোলেস্টেরল ব্যালান্স করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
জাম ক্যালোরি কম কিন্তু ফাইবারে ভরপুর, ফলে এটি খেলে তৃপ্তি আসে এবং ক্ষুধা কমে। এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে, যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
জামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ব্রণের প্রবণতা কমায় এবং বার্ধক্যের ছাপ প্রতিরোধ করে। এছাড়া জাম চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
মূত্রনালীর সমস্যা কমায়
জাম মূত্রবর্ধক ফল। এটি কিডনি ও মূত্রনালীর কার্যকারিতা ভালো রাখতে সাহায্য করে। মূত্রজনিত সমস্যা যেমন জ্বালা বা ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা কমায়।
মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
জাম দাঁত ও মাড়ির জন্যও উপকারী। এটি দাঁতের ব্যথা, মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির রক্তপাত প্রতিরোধে কার্যকর। অনেক আয়ুর্বেদিক মাউথওয়াশে জাম গাছের ছাল ব্যবহৃত হয়।