ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা মনের অসুখের একটি ধাপ। মানুষের মধ্যে বিষণ্ণতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এর মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে চিন্তার বিষয়। অনেকেই কঠিন এই মানসিক ব্যাধির সঙ্গে দিনের পর দিন লড়াই করেন নিজের অজান্তেই। তারা টেরই পান না যে ডিপ্রেশনে ভুগছেন। ডিপ্রেশনে ভোগার কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আত্মহননে মারা যাচ্ছে লাখো মানুষ। তাই সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা জরুরি। অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না যে আসলে ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলো কী। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
নেতিবাচক ভাবনা
যারা সব সময় হতাশায় ভোগেন, তারা নেতিবাচকতা থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে পারেন না। সবকিছু নিয়েই তারা হতাশা অনুভব করেন। যা তাদের আরও বিষণ্ণ করে তোলে। আপনার মধ্যেও যদি এই লক্ষণ থাকে, তাহলে বুঝবেন অজান্তেই ডিপ্রেশনে ভুগছেন আপনি।
ক্লান্তি
ডিপ্রেশন একজন মানুষকে আরও ক্লান্ত ও অলস করে তোলে। যতই ভালো ও পুষ্টিমানের খাওয়া, শরীরচর্চা করুন না কেন, সব সময়ই ক্লান্তির অনুভুতি হতে পারে। তাই এই বিষয় নিয়ে অবহেলা করবেন না।
মনোযোগে অসুবিধা
মনের ভেতর ডিপ্রেশন কাজ করলে এমনিতেই কোনো কিছুতে মনোযোগ দেওয়া যায় না। যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন তারা কোনো কাজে একাগ্রতার সঙ্গে মন বসাতে পারেন না। মনে সব সময়ই নেতিবাচক বিভিন্ন চিন্তা কাজ করে। চাইলেও তারা এসব দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন না।
উৎসাহ হারিয়ে ফেলা
বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে উৎসাহী হতে পারেন না এমন রোগীরা, কাজটি তার যত পছন্দেরই হোক না কেন। সব কাজেই এদের মধ্যে আগ্রহ ও উৎসাহ কম দেখা দেয়।
অনিদ্রা
ডিপ্রেশন গুরুতর আকার ধারণ করলে রোগী ভোগেন অনিদ্রায়। ঘুমের ধরনে পরিবর্তন আসাও বিষণ্ণতার আরও এক লক্ষণ, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
ক্ষুধা কমে যাওয়া
ওজন কমানোর জন্য অনেকেই ডায়েটে পরিবর্তন আনেন ও কম খেয়ে সুস্থ থাকার চেষ্টা করেন। তবে কোনো কারণ ছাড়াই যদি দেখেন আপনার ক্ষুধা কমে গেছে তাহলে তা ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। ডিপ্রেশনের রোগীরা বিভিন্ন বিষয়ে ভাবতে এতটাই মগ্ন হন যে দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপে মনোনিবেশ করতে পারেন না।
একা থাকার প্রবণতা
যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন তাদের মধ্যে একা থাকার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কারও সঙ্গে দেখা করা, গল্প করা কিংবা হাসিখুশি থাকতে তাদের ভালো লাগে না। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে এরা ইতস্তত করেন।
বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো বেশির ভাগের মধ্যেই একই দেখা দেয়। তাই আপনার বা প্রিয় কোনো মানুষের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।