• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

যেসব খাবারে কোলাজেন থাকে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম
যেসব খাবারে কোলাজেন থাকে

কোলাজেন এক ধরনের প্রোটিন যা মানবদেহের এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে। এটা ত্বক, হাড়, পেশি, টেন্ডনস ও লিগামেন্টস গঠনে সহায়তা করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন কমতে থাকে। 

তাই প্রত্যেকটি মানুষেরই কোলাজেনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। পুষ্টিবিদদের মতে, কোলাজেনের ঘাটতি কমাতে তাই খাবার তালিকায় কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা উচিত। চলুন জেনে নিই কোন কোন খাবারগুলো কোলাজেন সমৃদ্ধ-

প্রাণীর হাড় 
প্রাণীর হাড় কোলাজেনের ভালো উৎস। হাড় দিয়ে তৈরি ঝোল-ধরনের খাবার তৈরি করতে ধীরে ধীরে হাড় সেদ্ধ করার ফলে এর কোষে থাকা কোলাজেন পানির সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায় এবং জিলাটিনে পরিণত হয়। যা খুব সহজেই মানবদেহে শোষিত হয়। হাড়ে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড, খনিজ এবং পুষ্টি উপাদান যা- মানবদেহে কোলাজেন বাড়াতে সহায়তা করে।

মাছ 
মাছ বিশেষ করে এর ত্বক ও পাখনা কোলাজেনের খুব ভালো উৎস। মাছ থেকে সংগ্রহীত কোলাজেন মেরিন বা সামুদ্রিক কোলাজেন নামে পরিচিত যা, খুব সহজেই মানবদেহে শোষিত হয় এবং সবচেয়ে বেশি কার্যকর। সামুদ্রিক কোলাজেন সাধারণত টাইপ-ওয়ান কোলাজেন হিসেবে বিবেচিত যা স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা, হাড়, টেন্ডন ও অন্যান্য কোষ সুস্থ রাখে।

মুরগির মাংস
প্রাকৃতিক কোলাজেন টু সমৃদ্ধ যা হাড়ের সংযোগস্থানের জন্য উপকারী। আর্থ্রাইটিস নিরসনে সহায়ক। সহজে কোলাজেন পেতে চাইলে মুরগির পাখনা বা চামড়া-সহ মাংস খাওয়া উপকারী।

গরুর মাংস
গরুর মাংস বিশেষ করে এর হাড় কোলাজেনের ভালো উৎস। এ থেকে পাওয়া কোলাজেন বোভাইন কোলাজেন হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যা প্রাথমিকভাবে টাইপ ওয়ান এবং টু কোলাজেনের যৌগ। এই ধরনের কোলাজেন ত্বকের স্বাস্থ্য, হাড়, সংযোজনী কোষ ও দাঁতের জন্য বিশেষ উপকারী।

ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশ প্রোলিনের ভালো উৎস যা কোলাজের উৎপাদনকারী প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড হিসেবে কাজ করে। ডিমের কুসুমে কোনো কোলাজের না থাকলেও কোলাজেন সৃষ্টিকারী প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এখানে থাকে। ডিম নানাভাবে খাওয়া যায়। আর উচ্চ মানের প্রোটিন সমৃদ্ধ।

সাইট্রাস ফল
যদিও সিট্রাস ফলে কোনো কোলাজেন নেই। তবে এই ধরনের ফল যেমন- কমলা, আঙুর ইত্যাদিতে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলো কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ভিটামিন সি কোলাজের তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ করে। সাইট্রাস ফলের মতো বেরি বা জাম-জাতীয় ফল প্রাকৃতিক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা দেহে কোলাজেন তৈরিতে কাজ করে।

রসুন
রসুনের নিজস্ব কোনো কোলাজেন নেই। তবে এটা দেহে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। রসুন সালফার সমৃদ্ধ যা কোলাজেন উৎপাদনে, কোলাজেন ভেঙে যাওয়া প্রতিহত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোলাজেন পুনর্গঠনে সহায়তা করে। খাবার তালিকায় রসুন যোগ করা দেহে প্রাকৃতিক কোলাজেন উৎপাদনে সহায়ক।

দুগ্ধজাত খাবার
দুগ্ধজাত খাবার, যেমন- দুধ, পনির, দই ইত্যাদি কোলাজেন সমৃদ্ধ না হলেও দেহে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। এগুলোতে সরাসরি কোলাজেন না থাকলেও অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রোলিন ও গ্লাইসিন রয়েছে যা কোলাজেন তৈরির মূল যৌগ। 

হাড় মজবুত করতে এবং সংযোগস্থানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে থাকা অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ইত্যাদি সার্বিকভাবে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

কাজুবাদাম
কাজু বাদামেও সরাসরি কোলাজেন নেই। তবে এটা কোলাজেন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কাজুবাদাম কপার নামক খনিজ সমৃদ্ধ যা কোলাজেন ও ইলাস্টিন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইলাস্টিন কোলাজেনের চেয়েও বেশি ত্বকে স্থিতিস্থাপকতা দান করে এবং কপার তা উৎপাদনের সহায়তা করে। কাজুবাদাম জিংক-সহ অন্যান্য খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ যা দেহ পুনর্গঠনে ও কোলাজেন তৈরিতে সহায়ক।
 

সূত্র: হেল্থডটকম

Link copied!