আবাসনসংকট নিরসনের লক্ষ্যে তিন দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রায় ১১ ঘণ্টা অবস্থান শেষে হলে ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরা। এরপর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসভবনে ঢোকেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
এর আগে দুপুর ১টা থেকে ছাত্রীরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এর এক পর্যায়ে দাবি পূরণের আশ্বাসে হলটির আবাসিক শিক্ষক মনিরা পারভীন ও সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহের অনুরোধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে যান, সেখানে কয়েক দফায় আবাসিক শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক হলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে ডাকা হয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের। সেখানে তাদের মূল দাবি ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তরের বিষয়টি প্রশাসন মেনে না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
রাত পৌনে আটটার দিকে গাড়িতে করে বাসভবনের সামনে আসেন ঢাবি উপাচার্য। এ সময় তার গাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে অবস্থান নেওয়া নারী শিক্ষার্থীরা ‘সিট চাই সিট চাই, মৈত্রী হলে সিট চাই’, ‘বৈধ সিট আমার অধিকার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। শিক্ষার্থীরা তখন সাফ জানিয়ে দেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এখানেই অবস্থান কর্মসূচি পালন অব্যাহত রাখবেন।
একপর্যায়ে উপাচার্য গাড়ি নিয়ে তার কার্যালয়ের দিকে যান। ১১ টার দিকে ঢাবি উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান, সহকারী প্রক্টরসহ উপস্থিত হয়ে তাদের তিন দফা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে হলে ফিরে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “আমি সরেজমিনে দেখেছি ওখানে জীবন যাত্রার মান কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য না। সুযোগ-সুবিধার অনেক ঘাটতি রয়েছে। ছাত্রীরা যে দাবিগুলো জানিয়েছে সেগুলো খুব জরুরি। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের আন্তরিক প্রয়াস থাকা জরুরি। হল প্রশাসনকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে দ্রুত তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়।”
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে কুয়েত-মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তর করা, হলের আসন সংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে শিক্ষার্থী অ্যালোটমেন্ট দেওয়া এবং মূল ভবনের প্রতি রুমে ৬ জনের বেশি শিক্ষার্থী বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করা।