• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

এবার চাকরি পেলেন সনদ ছিঁড়ে কৃষিকাজ শুরু করা বাদশা


নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম
এবার চাকরি পেলেন সনদ ছিঁড়ে কৃষিকাজ শুরু করা বাদশা

চাকরি না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে কৃষিকাজ শুরু করা বাদশা মিয়া চাকরি পেয়েছেন। এসকেএম লিমিটেড নামের চামড়ার জুতা ও পাঞ্জাবি তৈরির একটি প্রতিষ্ঠান তাকে চাকরি দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) এসকেএম লিমিটেড কোম্পানির চেয়ারম্যান মুফতি সাইফুল ইসলাম বাদশাকে চাকরির প্রস্তাব দিলে তিনি কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

কোম্পানির চেয়ারম্যান মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে আমরা জানতে পারি, বাদশা মিয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন আবেদন করেও চাকরি পাননি। এক পর্যায়ে চরম হতাশ হয়ে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ পুড়িয়ে ফেলেন। এরপরই আমরা তাকে চাকরির প্রস্তাব দেই। দুই-একদিনের মধ্যেই তিনি ঢাকায় আমাদের কোম্পানির মূল ব্র্যাঞ্চে জয়েন করবেন।”

এসকেএম লিমিটেড কোম্পানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাদশা মিয়া বলেন, “এই প্রতিষ্ঠানে আমি আমার যোগ্যতার পুরোটাই দেওয়ার চেষ্টা করব। তাদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। কারণ তারা আমাকে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ দিয়েছেন। তারা আমার দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাকে চাকরি দিয়েছেন।”

বাদশা মিয়া আরও বলেন, “পরিবারে অর্থকষ্ট থাকা সত্ত্বেও নানা উপায়ে টাকা-পয়সার ব্যবস্থা করে পড়াশোনা করেও যখন চাকরি হয়নি এবং চাকরির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সও আমার শেষ হয়ে গেল তখন আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি। দীর্ঘদিন পড়াশোনা করে অর্জিত সনদ আমার কাছে অনর্থক মনে হতে থাকে। সেই হতাশা থেকেই মূলত ফেসবুক লাইভে গিয়ে সনদ ছিঁড়ে ফেলি এবং গ্রামেই কৃষিকাজ শুরু করি।”

২০১৪ সালে বাদশা মিয়া নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক পাস করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি। এর আগে ,২০০৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল, ২০০৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগে আলিম পাস করেন।

প্রায় ২০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পরও চাকরি পাননি নীলফামারীর ডিমলার যুবক বাদশা মিয়া। এভাবে এক সময় পার হয়ে যায় সরকারি চাকরির বয়সের সীমা। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিজের শিক্ষাজীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদ ছিঁড়ে ফেলেন। 

Link copied!