• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

ভাসমান পেয়ারা বাগান টানছে পর্যটকদেরও


মো. শহিদুল ইসলাম, বরিশাল
প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১, ০২:৩৪ পিএম
ভাসমান পেয়ারা বাগান টানছে পর্যটকদেরও

বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা আটঘর কুড়িয়ানা-ভীমরুলীর বিলের পেয়ারার ভাসমান হাট এখন পর্যটকদের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্রও। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। 

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত থাকে এই বিল। নৌ ও স্থল পথে পর্যটকরা উপভোগ করতে আসেন এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পেয়ারার এ হাটগুলোতে শুধু পর্যটকদেরই উপচে পড়া ভিড় বিষয়টা তেমন নয়। হাঁক-ডাক রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার পর্যটকরা শতাধিক ট্রলার এবং ডিঙি নৌকা ভাড়া করে পেয়েরা বাগান দেখতে আসেন।

বরিশাল বিভাগের তিন জেলার ৫৫ গ্রামে পেয়ারার ফলন হয়। বরিশাল, ঝালকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার প্রধান উৎস। আষাঢ়-শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী ও খালের পাড়ে থাকে পেয়ারার সমারোহ।

ঝালকাঠি সদর উপজেলায় ভাসমান হাট থেকে বাংলার আপেল খ্যাত পেয়ারা সরবরাহ হয় গোটা দেশে। এই ভাসমান হাট দেখতে ভ্রমণপিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসেন। পেয়ারা রাজ্য ঘুরে দেখতে নৌকাই পর্যটকদের একমাত্র উপায়। সড়ক পথে ঘুরলেও চোখে পড়বে পেয়ারা বাগান। শুধু পেয়ারাতেই সীমাবদ্ধ নয় এখানে পাওয়া যাবে আমড়া, আখ, লেবু ও বিভিন্ন জাতের কলাসহ নানা ধরণের শাকসবজি। 

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়ন ও নবগ্রাম ইউনিয়নে ভীমরুলী বিলসহ বিভিন্ন খালে মৌসুমী ফল পেয়ারার ভাসমান হাট এখন বেশ জমজমাট। দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলে আসা পর্যটকদের অনেকেই এ হাট দেখতে আসেন। তবে পেয়ারার মৌসুম শেষ পর্যায়ে হওয়াতে আমদানি কম।

বর্তমানে স্থানীয় স্বরূপকাঠি জাতের প্রতি মণ পেয়ারা ৮০ টাকা পাইকারি দামে (কেজি ২০ টাকা) বিক্রি হচ্ছে। তবে থাই জাতের পেয়ারা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় (মণ ২ হাজার ৮০০ টাকা)।

ঝালকাঠি কৃষি বিভাগ ও বাগান মালিকদের সূত্রে জানা যায়, এ বছর সদর উপজেলার ২১টি গ্রামে ১ হাজার ৮৫০ একর জমিতে পেয়ারার বাগান করা হয়েছে। এর মধ্যে কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম কীর্তিপাশা, ভীমরুলী, মীরাকাঠি, ভৈরমপুর, ডুমুরিয়া, খেজুরা, খোদ্দবরাহর, বেশাইন খান, শংকর ধবল, বেউখান ও স্থানসিংহপুর এবং নবগ্রাম ইউনিয়নের নবগ্রাম, হিমানন্দকাঠি, দাড়িয়াপুর, সওরাকাঠি ও কঙ্গারামচন্দ্রপুর গ্রামে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা উৎপাদন হয়েছে।

ভাসমান হাটগুলোর মধ্যে কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ভীমরুলী গ্রামের ভীমরুলী বিলে গড়ে ওঠা ভাসমান হাটটি সবচেয়ে বড়। অন্য হাটগুলো পেয়ারা বাগানের মধ্য দিয়ে বয়ে যায় খালের দিকে।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “চাষিরা যে আবাদে লাভ বেশি পাবেন, সেদিকেই আগ্রহী হবেন। যখন দেশি পেয়ারা প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়, তখন আমড়া বিক্রি হয় ৫০ টাকায়। থাই পেয়ারাও বেশি লাভজনক।”

বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষার্থী সুমী ও আয়শা ইসলাম এবং ফরিদপুর থেকে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, এখানে জীবন্ত প্রকৃতি ভালো লাগে, তারা সুযোগ পেলেই এখানে চলে আসেন।

Link copied!