• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

নবজাতককে বিক্রি করে দিলেন মা, উদ্ধার করল পুলিশ


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪, ১১:৩২ এএম
নবজাতককে বিক্রি করে দিলেন মা, উদ্ধার করল পুলিশ

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় পারিবারিক দ্বন্ধে  নবজাতক সন্তানকে  বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে।  খবর পেয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (৩ এপ্রিল) জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিম খান ইউনিয়ন থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে উলিপুর থানা পুলিশ।

অভিযুক্ত ওই মা হলেন জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের ট্রাক চালক হাবিবুর রহমানের স্ত্রী শিরিনা আক্তার।

পুলিশ জানায়, স্ত্রী শিরিনা আক্তার উলিপুরের ডক্টরস ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে গত ২৩ মার্চ একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। স্বামী খোঁজ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে সিজারের টাকা পরিশোধের জন্য তার একমাত্র নবজাতক সন্তানকে গত ২৬ মার্চ অজ্ঞাতস্থানে বিক্রি করে দেওয়ার কথাবার্তা চূড়ান্ত করেন ওই নবজাতকের মা।

পরে বিষয়টি নবজাতকের বাবা হাবিবুর রহমান জানতে পেরে বুধবার দুপুরের দিকে সন্তানকে ফিরে পেতে উলিপুর থানায় অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে উলিপুর থানা পুলিশের একটি টিম দ্রুত গোপন সংবাদ সংগ্রহ করে। তাতে জানা যায় রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামশিং মুন্সিপাড়া এলাকার পারভিন আক্তার (৩০) তার ভাগনি নিঃসন্তান মোছা. সেলিনা বেগমের বাড়িতে অভিযান চালায়।

উলিপুরের ডক্টরস কমিউনিটি ক্লিনিকের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত ২৩ মার্চ আমাদের ক্লিনিকে বাচ্চাটি হয়। ২৪ মার্চ বাচ্চাটির মা শিরিন আক্তার সিজারের বিল ১০ হাজার ৫০০ টাকা ক্লিনিকে দিয়ে পরিশোধ করে তার সন্তানকে নিয়ে গেছে। পরে কি হয়েছে আর আমরা জানি না।”

হাবিবুরের বাবা গোলাম হোসেন বলেন, “আল্লাহ দিলে আমাদের কোনো অভাব নাই। আমার ছেলের বউয়ের আগে একটা বিয়া হয়। ওই বিয়ার তালাক হবার পর ছেলের বিয়া দিছি দুই বছর হলো। ছেলের সঙ্গে বনিবনা নাই। ছেলের বউ ৬ মাস থেকে বাপের বাড়িতে। আমার ঘরের প্রথম নাতি। সেই নাতিকে না জানিয়ে বিক্রি করে দিছে ছেলের বউ।”

ওই নবজাতকের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, “আমার স্ত্রীর অতীতের ঘটনা সব ভুলে আমি তাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। বিয়ে হওয়ার দুই বছর হলো। এটা আমাদের প্রথম সন্তান। বাচ্চাটা হওয়ার সময় আমি ঢাকাতে ছিলাম। শিরিন অভিমান করে কাউকে কিছু না বলে বাচ্চাটা বিক্রি করে দিয়েছে। উলিপুর থানা পুলিশকে জানালে তারা বাচ্চাটা উদ্ধার করে।’

পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, “দারিদ্রতার কারণে নয় পারিবারিক দ্বন্দ্বে নবজাতক বাচ্চাটি বিক্রি করা হয়েছে। পরে আমরা বিষয়টি জানার পর দ্রুত বাচ্চাটি উদ্ধার করি। বর্তমানে বাচ্চাটি বাবার কাছে রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসনে আমরা কাউন্সিলিং করছি ও পরিবারটিকে মনিটর করছি।”

Link copied!