• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

রিয়ালকে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে বার্সেলোনা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৩, ০৪:১৯ এএম
রিয়ালকে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে বার্সেলোনা

খেলা প্রায় শেষের পথে। সম্ভাব্য ফল হিসেবে সবাই ততক্ষণে হয়তো ড্র মেনেও নিয়েছিলেন। ঠিক এমন সময়ে অতিরিক্ত মিনিটে গোল করলেন বার্সেলোনা ফুটবলার কেসি। বল রিয়ালের জালে জড়ানোর সাথেই যেন কেপে উঠলো পুরো ক্যাম্প ন্যূ। ৯০ হাজার দর্শকের চিৎকার বুঝিয়ে দিলো এই গোলের মাহাত্ম্য। যে গোলে শুধু চীরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত হয়নি, একই সাথে তিন বছর পর লা-লিগার শিরোপা জেতার পথও যে পরিস্কার হলো কাতালানদের। 

ঘরের মাঠে শুরু থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের উপর দাপট দেখানো শুরু করে বার্সেলোনা। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে ভাগ্যের সহায়তায় প্রথম লিড পায় রিয়াল। গোল হজম করে যেন আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে বার্সেলোনা। একের পর এক আক্রমণে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে খেলায় সমতায় ফেরে তারা। বিরতি থেকে ফিরেও উত্তাপ ছড়িয়েছে ন্যূ-ক্যাম্পে।

শেষদিকে রিয়াল মাদ্রিদ গোল করলেও সেটা বাতিল হয়েছে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে। তার কিছুক্ষণ পরেই জয়সূচক করে বার্সেলোনা। আর তাতেই রোববার (১৯ মার্চ) ঘরের মাঠে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে বার্সেলোনা।

লা-লিগায় এমনিতেই এই ম্যাচের আগে বার্সার চেয়ে ৯ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। ফলে তাদের সামনে সুযোগ ছিল পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে নেওয়ার। তবে পুরো ম্যাচেই বার্সার দাপটের সামনে কোনো উত্তরই প্রস্তুত ছিল না কার্লো আনচেলোত্তির দল। এই জয়ে লা-লিগায় শিরোপা জয়ের দৌড়ে রিয়ালের চেয়ে ১২ পয়েন্টে এগিয়ে গেল জাভি হার্নান্দেজের দল।  

ম্যাচের ষষ্ট মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া হয় বার্সেলোনার। বক্সের ভিতর ডানপাশ থেকে রাফিনহোর গোলার মতো হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় ফিরিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।

এরপর নবম মিনিটে ভাগ্যের সহায়তায় লিড পায় রিয়াল। বক্সের ভিতরে ডান পাশ থেকে ভিনিশিয়াস জুনিয়রের নিরীহ ক্রস বার্সা ফুটবলার রোনাল্ড আরাউহোর গায়ে লেগে জড়িয়ে যায় নিজেদের জালে। যেখানে তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষক মার্ক টার স্টেগানের।

তিন মিনিটের ব্যবধানে গোল শোধ করার সুযোগ পেয়েছিল বার্সা। কিন্তু রিয়াল রক্ষণের ভুলে বক্সে ফাঁকায় বল পেলেও শট নিতে পারেননি রবার্ট লেভানডোভস্কি। ২০তম মিনিটে দারুণ একটি ক্রস দিয়েছিলেন রাফিনহো। কিন্তু লাফিয়েও সেই বলে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি আরাউহো। আর তাতে আরও একবার হতাশায় পুড়তে হয় স্বাগতিক শিবিরকে।

চার মিনিটের ব্যবধানে এবার কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে বার্সা ডিফেন্ডার ক্রিস্টেনসনে হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গোল শোধের নেশায় বারবারই রিয়ালের রক্ষণে হামলে পড়েছে বার্সেলোনা। কিন্তু প্রতিবারই রিয়ালেএ শক্ত রক্ষণের সামনে খেই হারিয়েছে তাদের আক্রমণ।

৩৪ মিনিটে বক্সের ডান পাশের উপর থেকে গোলার মতো শট নিয়েছিলেন বার্সার রাফিনহো। কিন্তু সেই শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় কর্ণারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন রিয়াল গোলরক্ষক। 

বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। আরাউহোর ক্রস ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি রিয়াল মিডফিল্ডার কামাভিঙ্গা। সেই বল ডি ইয়ংয়ের পা ঘুরে পেয়ে যান রাফিনহো। তবে এবার ঠিকঠাক শট নিলেও বল আন্টোনিও রুডিগারের পায়ে লাগার পর যায় সার্জিও রবার্তোর কাছে। জটলার মধ্য থেকে বুলেট গতির শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। 

বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণের ধার বজায় রাখে দুই দল। আর তাতে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শট নিয়েছিলেন বার্সার লেভানডোভস্কি। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

 ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে সার্জিও বুসকেটসের অবিশ্বাস্য ভুল পাসে সুযোগ পেয়ে যান বদলি হিসেবে নামা রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রদ্রিগো। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি, শট হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট।

এই দুই মিনিট পর রাফিনহোর আরেকটি শট প্রতিহত করেন  কোর্তোয়া। ৬৭তম মিনিটে  রাফিনিয়ার ক্রসে অ্যাক্রোবেটিক সিজার কিক নিয়েছিলেন লেভানডোভস্কি, কিন্তু সেই শট লক্ষ্যে থাকেনি।

৮১ মিনিটে বার্সার জালে বল পাঠিয়ে ন্যূ ক্যাম্প স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন রিয়ালের ফুটবলার মার্কো আসেনসিও। কিন্তু সেই গোল অফসাইডে বাতিল হলে উল্টো হতাশ হতে হয় রিয়াল শিবিরকে।

এরপর ম্যাচের ফল যখন ড্র-এর দিকে আগাচ্ছিল তখনই বদলি হিসেবে নামা বার্সা ফুটবলার কেসি সব হিসেব-নিকেষ বদলে দেন।  লেভানডোভস্কির ব্যাক হিলে বল পেয়ে আলেহান্দ্রো বাল্দে পাস দেন কেসিকে। ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে বার্সার জনহ জয়সূচক গোল এনে দেন তিনি।

ম্যাচের বাকি সময়ে লিড হরে রেখে রিয়ালের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছারে বার্সেলোনা। এই ম্যাচের পর ২৬ ম্যাচে ২২ জয় ও দুই ড্রয়ে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল জাভির দল।

অন্যদিকে সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হারে বার্সেলোনার চেয়ে ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।   

Link copied!