করোনা সংক্রমণ ফের উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে। মৃত্যুর সংখ্যা কম থাকলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে শনাক্তের সংখ্যা। যে কারণে দেশের সকল স্কুল, কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই সপ্তাহ ফের বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও একই ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে অনলাইন ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস করার প্রতি অনীহা প্রকাশ করেছে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে অভিভাবকদের মতামতও রয়েছে ভিন্ন রকম।
এর আগে করোনা সংকটে প্রায় ৫৪৪ দিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা নির্ভর হয়ে পড়েছিল অনলাইন ক্লাসে। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট বয়সের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনে সরকার। বিগত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে খুলতে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুরু হয় সশরীরে ক্লাস। সীমিত সিলেবাসে নেওয়া হয় এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে ফের এলোমেলো হতে শুরু করেছে সব কিছু।
রাজধানীর সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওয়াশিমুল রাফিন বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ থাকার কারণে স্যারদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। ক্লাসে স্যাররা যেভাবে হাতে ধরে বুঝিয়ে দিতেন, সেই সুযোগটাও হচ্ছে না। শাসন, আদর এগুলোও হচ্ছে না। এর কারণে স্যারদের সঙ্গে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।”
এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, “অনলাইনের ক্লাসগুলোতে একটা সমস্যা হচ্ছে, ক্যামেরা বন্ধ থাকলে স্যাররা আমাদের দেখতে পারেন না। কে কী করে, বোঝা যায় না। আর তাই অনেকে বাজে ব্যবহার করে। এভাবে আস্তে আস্তে স্যারদেরও আমাদের প্রতি ভালোবাসা কমে যাচ্ছে।”
ফারাহ আদিবা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘বিগত দুই বছরে করোনায় স্কুল বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের যেসব বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, শিক্ষার্থী আর শিক্ষকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া। কারণ সকল ধরনের পাঠ্যক্রম নেটভিত্তিক হয়ে যাওয়াতে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ রাখতে পারেনি।”
এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘‘আমাদের দেশের অনেকেই আছে, যারা পারিবারিক আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য অনলাইন ক্লাসগুলোতেও সঠিকভাবে উপস্থিত হতে পারেনি। যার প্রভাব যেমন তাদের দৈনন্দিন পড়াশোনায় পড়েছে, তেমনি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তাদের মানসিক বিকাশে। শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে তাদের সামাজিকতায়। আগে যেমন শিক্ষকের প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে আগ্রহী চোখ নিয়ে শিক্ষার্থীদের হাত উঠে আসতো বেঞ্চ থেকে, সেখানে আর এই দূরত্ব শিক্ষার্থীদের মনে তৈরি করেছে শিক্ষকদের জন্য ভীতি। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাশা, এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে ঠিকই একদিন আমরা আবার দেখতে পাবো শিক্ষক-শিক্ষার্থী মধ্যে সেই অপরূপ মেলবন্ধন।”
৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মারুফ বলেন, ‘‘অনলাইনের থেকে আমার অফলাইনে ক্লাস করতে বেশি ভালো লাগে। প্রতিদিন শিক্ষকদের দেখতে পাই। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা হয়। অনেক মজা হয়। কোনো পড়া না বুঝলে শিক্ষকদের সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে পারি। কিন্তু অনলাইনে দেখা যায় অনেক সময় ইন্টারনেটের সমস্যা থাকে। আর স্যারদের বেশি প্রশ্ন করতে পারি না।”
কলেজে পড়ুয়া নিধি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘আমরা যখন বাসায় অনলাইনে ক্লাস করি তখন দেখা যায়, অনেক সমস্যা হয়। আর এ সমস্যাগুলো কিন্তু বাসায় থাকলে সমাধান করতে পারি না। বাসায় পড়লে পড়াশুনায় তেমন মনোযোগী হওয়া যায় না।’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়া বলেন, ‘‘অনলাইনে ক্লাস নিলে আমাদের সারাক্ষণ মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এতে করে আমাদের মানসিকভাবে তো বটেই, চোখে এবং কানেও সমস্যা হয়। আর সারাদিন এভাবে ক্লাস করাও অনলাইনে সম্ভব হয় না। যখন সশরীরে ক্লাস করি, তখন পড়াশুনার প্রতি আনন্দ এবং উদ্দীপনাও বাড়িয়ে দেয়।’’
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী তৌফিক হাসান বলেন, ‘‘করোনায় লকডাউনের সময় যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, তখন অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম দিকে দেখা গিয়েছিল যে, শতভাগ শিক্ষার্থীর কাছে স্মার্টফোন নেই। এছাড়া যে অ্যাপগুলোর মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হয়, যেমন— জুম মিটিং, গুগল ক্লাসরুম, ফেসবুক লাইভ ইত্যাদির সঙ্গে আগে থেকে আমরা অনেকেই পরিচিত ছিলাম না। তবে পরবর্তী সময়ে আমরা সবাই এই অ্যাপগুলোর ব্যবহার অনেক ভালোভাবেই শিখে গিয়েছি।”
ঢাবি’র এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘‘ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের বন্ধু হয়ে শিক্ষাব্যবস্থার হাল ধরে রেখেছে। যদিও ইন্টারনেটের ধীরগতি, স্মার্টফোন না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাদের। তবুও এই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দীর্ঘ দিন আমরা শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ক্লাসে বসে ক্লাস করা থেকে বিরত রয়েছি, যার অনেকটাই অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া প্রথম দিকে আমাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অনেকটা কমে গিয়েছিল, যা ভবিষ্যতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করার মজাই অন্যরকম, যা অনলাইনে সম্ভব হয় না।’’
সুমন কায়সার নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘করোনায় যখন আমাদের অনলাইনে ক্লাস ছিল তখন গ্রামের বাড়িতে থাকায় পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে নিয়মিত ক্লাসে সংযুক্ত হতে পারেনি। আবার দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থীর ডিভাইস না থাকার ফলেও ক্লাস করতে পারেনি, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটাই পিছিয়ে পড়ার মতো। এমনও দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে যুক্ত হয়ে, ভিডিও অফ রেখে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় দিয়েছে। এতে করে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে। তবে অনলাইন ক্লাস কিছুটা হলেও আমাদের সুবিধা দিয়েছে। না-হলে একাধারে এত দিন পড়াশোনার বাইরে থাকলে আমরা আরও পিছিয়ে যেতাম।”
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফারজানা জান্নাত বলেন, “বিগত দুই বছর ধরে বাচ্চারা স্কুলে যেতে না পেরে তাদের মন-মানসিকতা সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে। তাদের প্রিয় শিক্ষক এবং বন্ধু-বান্ধবের প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পাঠ গ্রহণের মাধ্যমে যে আকর্ষণ বাচ্চাদের গড়ে উঠেছিল, তা এখন আর তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের প্রতি যে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং ভয় ছিল তা এখন অনলাইনে পাঠদানের মাধ্যমে বিরাজ করছে না। আমার মনে হয়, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যাবে। ফলে পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের লেখাপড়ায় ধরে রাখা আর সম্ভব হবে না।”
রবিউল ইসলাম নামের আরেক অভিভাবক জানান, “শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক গড়েই ওঠে ক্লাসরুমে। ছাত্রের প্রতিভায় শিক্ষকের স্নেহ প্রকাশিত হয় ভালেবাসায়। কিন্তু বর্তমান সময়ের অনলাইন প্লাটফর্মে শিক্ষকের দিকনির্দেশনাই শুধু ছাত্ররা পাচ্ছে। শিক্ষকদের সান্নিধ্যে থেকে জীবন গড়তে পারছে না ছাত্ররা। বর্তমান সময়ের শিক্ষকরা শুধু অনলাইনে পাঠ্যপুস্তকের পাঠদানই দিচ্ছে। কিন্তু একজন শিক্ষক আমাদের শুধু পাঠ্যবইয়ের শিক্ষার জন্যই নন, আদিকাল থেকেই শিক্ষকরা পাঠ্যবইয়ের শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের মানবিক শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আমরা একজন আদর্শ শিক্ষককে দেখে ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আজ ছাত্ররা শিক্ষকদের পরিচর্যা পাচ্ছে না। যার কারণে ধাবিত হচ্ছে নানা অনৈতিক কাজে। শিক্ষকদের সান্নিধ্য না পেয়ে তাদের মধ্যে মনুষত্ব কতটা বিকশিত হচ্ছে, তা আজকের সময়ের প্রশ্ন।’’
দীপিকা ঘোষ নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের চলন, নৈতিকতা বা মূল্যবোধ সব কিছু অনেক কমে গেছে। বিদ্যালয়ে তারা যে নিয়ম-নীতির মধ্যে থাকে, অনলাইন ক্লাস করার কারণে এগুলো থেকে তারা ব্যহত হয়। বিদ্যালয় থেকে যে পড়াশুনাটা পায়, বাড়ি থেকে কিন্তু সেটা কখনোই দেওয়া সম্ভব হয় না। শিক্ষকদের মতো করে অভিভাবকরা কিন্তু শিক্ষাটা দিতে পারে না। তাছাড়া শিক্ষদের কথাই বেশি মনে রাখে শিক্ষার্থীরা।’’
এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, ‘‘শিশুরা একটা জায়গাতে বেশিক্ষণ থাকলে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। কারণ হিসেবে দেখা যায়, অনেক বাচ্চা রাত জেগে ফেসবুক, ইউটিউব, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানো, অর্থাৎ ইন্টারনেটে বেশি সময় দিয়ে থাকে। আর অনলাইনে পড়াশুনা কতটুকুই-বা হয়, যতটুকু না হলে হয় না, ততটুকুই হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। কারণ সশরীরে ক্লাস করলে শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের সবসময় যোগাযোগ থাকে।”
এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, “শিক্ষার্থীরা বাসায় বাবা-মায়ের সান্নিধ্য পাচ্ছে। কিন্তু অভিভাবকরা কতক্ষণ তাদের দেখে রাখবে? তাদেরও কাজকর্ম থাকে। সব কিছু সামলাতে অনেক সমস্যা হয়। এখন কে কোন সময় করোনায় আক্রান্ত হয়, তা বলা যায় না। তবে আমরা আশা রাখি, করোনা সংক্রমণ কমলে বাচ্চারা তাদের এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে।”
শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ অনলাইনে ক্লাস করার অনীহার পেছনের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, “করোনার কারণেই আমাদের অনলাইনে ক্লাস করতে হচ্ছে। আমাদের দেশে শিক্ষাদান বা গ্রহণের প্রক্রিয়াটা হলো, সেখানে ছাত্র বা শিক্ষক একটা ক্লাসরুমে অন্তর্ভুক্ত হয়ে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যমে শিক্ষার উপকরণ বা শিক্ষা প্রদান করবেন এবং শিক্ষার্থীরাও তা সুন্দরভাবে গ্রহণ করবে। অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কারণে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা ঘাটতি থেকেই যায়। তবে যেকোনো নতুন পদ্ধতি চালু হলে একটু সমস্যা থাকবেই।”
ঢাবির এই শিক্ষক আরো বলেন, “অনলাইন সিস্টেমের ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু দুর্বলতা আছে। তার মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক এবং কাঠামোগত দুর্বলতা। কাঠামোগত, যেমন— আমাদের দেশে সকল জায়গায় একই রকম ইন্টারনেটের গতি থাকে না। তাছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবাতেও জটিলতা রয়েছে। অন্যদিকে সব শিক্ষার্থীর সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নেই। এমনকি দেখা যায়, অনেকের মোবাইল আছে, কিন্তু ইন্টারনেট কেনার আর্থিক খরচ থাকে না। অনেক শিক্ষার্থী আবার সহজে বুঝতে পারছে না কীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। তবে এর ব্যবহার কেউ দেখিয়ে দিলে সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়া অন্যান্য যে ঘাটতি আছে সেগুলো সমাধানের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে খুব সীমিত উদ্যোগ আমরা লক্ষ করেছি।”
তৌহিদুল হক বলেন, “অনলাইন যেভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়, শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে শিক্ষার্থীরা কোনো কিছু না বুঝলে তাকে বুঝানো, তাকে পড়া ধরা— সবগুলো সিস্টেম কিন্তু অনলাইন প্রক্রিয়াতে আছে। কিন্তু ধরনগুলোতে ভিন্নতা রয়েছে। সেই ধরনগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেক শিক্ষক ওয়াকিবহল না, অথবা এই পদ্ধতির বিষয়ে ভালোভাবে জানেন না। তবে এটি তার দোষ বা অসক্ষমতা না। কারণ এমন প্রক্রিয়া আগে ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি।”
এদিকে রোববার (৩০ জানুয়ারি) মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস (বিসিপিএস) অডিটোরিয়াম হলে কোভিড-১৯-এর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘‘এখন থেকে আমরা ১২ বছরের ওপরে সবাইকে টিকা দেব। আগে শুধু স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ছিল, এখন শিক্ষার্থী ছাড়াও বাকি সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও এখন টিকা পাবে।’’
শিশুদের টিকা প্রয়োগ পদ্ধতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘‘টিকা কার্যক্রম বর্তমানে যেভাবে চলছে, সে পদ্ধতিতেই ১২ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে। কেন্দ্রে গেলেই টিকা পাবে। যদি কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারে, তাহলেই আমরা টিকা দেব। কিছু দেখাতে না পারলেও আমরা তাদের ফেরত দেব না।’’
বিভিন্ন দেশেই টিকার বয়সসীমা পাঁচ বছর করা হয়েছে, বাংলাদেশেও এমন কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘টিকার বয়সসীমা পাঁচ বছর করার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা পর্যালোচনা করে আমাদের জানাবে বলে জানিয়েছে। তাদের থেকে আমরা বার্তা পেলেই টিকার বয়সসীমা পাঁচ বছরে নামিয়ে আনা হবে।”