• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

নিম্নবিত্তের পাতে ওঠে না স্বাদের ইলিশ


বিজন কুমার
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩, ০৯:৪৪ পিএম
নিম্নবিত্তের পাতে ওঠে না স্বাদের ইলিশ
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের দোকানে ইলিশ মাছ।

নদীমাতৃক বঙ্গীয় তটে প্রাচীনকাল থেকেই পরম স্বাদের ইলিশ মাছ বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। একসময় প্রিয় এই মাছটি ধনী-গরীব সকলের পাতে উঠলেও তা যেন অনেকের কাছেই এখন স্বপ্ন। 

সময়ের সঙ্গে জাতীয় মাছের মর্যাদা পেয়েছে ইলিশ। সু-স্বাদু বলে বর্হিবিশ্বেও ব্যাপক নাম কুড়িয়েছে, তাই রপ্তানিও হচ্ছে। সরকারের উদ্যোগে বেড়েছে উৎপাদন। অথচ গত কয়েক বছর ধরে প্রিয় এই ইলিশ ছুঁতে পারছে না দেশের সংখ্যাধিক্য নিম্নবিত্তরা। তাদের দাবি দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারপর রপ্তানি হোক। তাহলেই নিম্নবিত্তরা ইলিশের স্বাদ আবারও চেখে নিতে পারবে পরিবারের প্রিয়জনদের সঙ্গে।

বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা। বৈদ্যুতিক আলোয় ঝলমলিয়ে উঠেছে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মাছের আড়তের ঠিক সামনের অংশ। সেই আলোয় ঝলমল করছে রুপালী ইলিশ। একদিকে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষি। অন্যদিকে বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক। বাজারে ইলিশের দাম বেশ চড়া। ক্রেতাদের মতে-নিম্নবিত্তদের পরম স্বাদের এই ইলিশ মাছ কেনার সামর্থ্য নেই।

কারওয়ান বাজারে ক্রেতার অপেক্ষায় ইলিশ বিক্রেতা

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এই বাজারে কথা হয় আলামিন নামের এক ক্রেতা সঙ্গে। গত তিনদিন ধরে বাজারে ঘুরছেন তিনি। কিন্তু কিনতে পারছেন না ইলিশ। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “বাজারে অনেক দাম ইলিশের। ইলিশ মাছ কেনার জন্য তিনদিন ধরে বাজারে ঘুরছি। আজকে যদি দাম কম পাই তাহলে একটা ইলিশ কিনবো। কারণ আমি যে টাকা আয় করি, সেই টাকায় ইলিশ কিনে খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

১৫ দিন আগে বাজারে ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে আকার অনুযায়ী ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা। যা আলামিনের মতো অনেক ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই রয়ে গেছে এখনো। 
ক্রেতারা বলছেন, ইলিশ উৎপাদনে যেহেতু বাড়তি খরচ নেই। সেহেতু ইলিশের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে হওয়া দরকার। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে দাম কমলেও বিক্রি বাড়েনি ইলিশের।

আব্দুল হামিদ নামে এক ক্রেতা বলেন, “অনেক ছোট একটা ইলিশ মাছ ৪০০ টাকা দিয়ে কিনছি। সর্বোচ্চ ৪ পিস মাছ হবে। দাম অনেক বেশি। ইলিশ নিয়ে একটা বিষয় মাথায় কাজ করে না। যে মাছ সাগর-নদী থেকে ধরা হয়। বাড়তি উৎপাদন খরচ নেই। সেই মাছ এতো দাম দিয়ে কেন কিনতে হয়? দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারপর রপ্তানি হোক ইলিশ। তাহলে আমাদের মতো মানুষেরা ইলিশ খেতে পারবে।”

বাজারে আসা আব্দুল করিম বলেন, “ইলিশ মাছ গরিব মানুষের জন্য নয়। এই মাছ ধনীদের জন্য। বাজারে একটা ইলিশের এতো দাম। একটা মাছ নাকি ১৪০০ টাকা-১৫০০ টাকা। পাঙাস মাছ ২০০ টাকা দিয়ে কিনে খাইতে সমস্যা হয়, আর ইলিশ।”

খোকন মিয়া নামে এক বিক্রেতা বলেন, “ইলিশ মাছের দাম আগের চেয়ে কমছে। তবু বেশি বিক্রি নেই। ক্রেতারা এসে আরও কম দামে চায়। দরকষাকষি করতে খুবই বিরক্ত লাগে। তাদের অভিযোগের শেষ নেই।”

পারভেজ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, “আমি যখন ক্রেতা তখন কম দামে চাইবো। এটাই স্বাভাবিক। তবে যাই হোক ইলিশের দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে ক্রেতার কাছে এখনো দাম বেশি মনে হয়। সামনের দিকে আরও কমবে বলে প্রত্যাশা করি। বাজারে ক্রেতারা আসে, দাম নিয়ে অনেক কথা বলতে হয়।”

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!