• ঢাকা
  • বুধবার, ০৯ জুলাই, ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মুহররম ১৪৪৬
বিবিসির অনুসন্ধান

আন্দোলনকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ১০:৩০ এএম
আন্দোলনকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ সময় আন্দোলনকারীদের দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা নিজেই আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন। ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিং থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বিবিসি এ রেকর্ডিং যাচাই করেছে।

ফাঁস হওয়া অডিও অনুসারে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন শেখ হাসিনা। এ সময় তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করারও অনুমতি দেন তিনি। সরকারি এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথোপকথনের এ অডিও এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। এ অডিওতে তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত বছরের ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপটি করেন। চলতি বছরের মার্চে এটি ফাঁস হয়। এ অডিওর সঙ্গে ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

বিবিসি জানিয়েছে, ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও যাচাই করা হয়েছে। এতে সত্যতা মিলেছে। ফরেনসিক এক্সপার্টরা কোনো ধরনের এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পাননি। এমনকি এটি কৃত্রিমভাবে তৈরির সম্ভাবনাও খুবই কম।

মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফোন কলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল এমনটি একটি ঘরে এ রেকডিংটি ধারণ করা হয়েছিল। কারণ এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সূচকের মানে হলো অডিওর কোনো হেরফের করা হয়নি। এতে তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছে। এছাড়া ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করা হয়েছে। অডিওতে কোনো কৃত্রিম পরিবর্তনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেন, রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো যথার্থভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া এগুলো অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।

আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেন, বিবিসির উল্লেখ করা টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কিনা তা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না।

 

 

Link copied!