রাজধানী ঢাকার অন্যতম একটি সমস্যা যানজট। নগরবাসীর কাছে এই সমস্যা গলার কাঁটা মতো। এমন অবস্থা থেকে স্বস্তি ফেরাতে ২০১৬ সালে শুরু হয় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বা রাইড শেয়ার সুবিধা। কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই যানজটে নাকাল ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে চালকরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, দীর্ঘ যানজটে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন যানবাহন। এর মধ্যে চোখে পড়ে রিকশা, সিএনসিচালিত অটোরিকশা, বাস, ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল। যানজটের প্রথম সারিতেই পাওয়া যায় মোটরসাইকেল। ট্রাফিক নির্দেশনা দিলেই দ্রুতগতিতে সবার আগে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছে মোটরসাইকেলগুলো।
বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে চোখে পড়ে, মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রীদের ডাকছেন। প্রত্যাশিত ভাড়া ঠিক হলে যাত্রীদের নিয়ে রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। চালকরা বলছেন, “যানজটের কারণে আগের তুলনায় আয় কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ।। একইসঙ্গে বেড়েছে ভোগান্তি। যে ভোগান্তি তাদের সঙ্গে পোহাচ্ছেন যাত্রীরাও।”
পান্থপথ এলাকার তুহিন। কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে সকালে। ফার্মগেট এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, “বাইক (মোটরসাইকেল) মূলত চালু হয়েছে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। কিন্তু সেই সমস্যা এখনও আছে। রাস্তার যানজটে অনেক বাইক আটকে আছে। তাই দ্রুত আর বাইকে যাওয়া যায় না। এই সমস্যা আদৌ ঠিক হবে কি না জানি না।”
শাকিল আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, “বাইকে আর দ্রুত যাওয়া যায় না। বাইকে চেপে সেই যানজটেই আটকে থাকতে হয়। ফুটপাত দিয়ে তো আর বাইক চালানো যাবে না। যেহেতু, ঢাকা শহরে ভোগান্তির অপর নাম যানজট। তাই কিছু করার নাই ভোগান্তির শিকার হতেই হবে।”
রাজধানী লালবাগ এলাকার রুস্তম আলী। তিনি দীর্ঘদিন রাইড শেয়ার করেন। যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “যানজটের কারণে আগের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। যদি রাস্তা ফাঁকা থাকে আর ফুল টাইম (সকাল ৮ থেকে রাত ১০টা) বাইক চালানো যায়, তবে গড়ে এক হাজার টাকা আয় হয়। রাস্তায় অনেক যানবাহন হয়েছে। ফলে আমাদের আয়ও কমছে। রাস্তায় মূলত যানজট সৃষ্টি করে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা। অনেকেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে চালায় না গাড়ি। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।”
কামাল হোসেন নামে মোটরসাইকেল চালক বলেন, “আগের মতো যাত্রী পরিবহন করা যায় না। আগে যানজট কম ছিল। দ্রুত যাত্রী পৌঁছাতে পারতাম। আর নতুন যাত্রীও পেতাম। কিন্তু এখন আর হয় না। যানজটে আটকে থাকতে হয়। ৩০ মিনিটের জায়গায় ৪০ মিনিট লাগে। ফলে আয় আগের থেকে কমছে।”
ইউসুফ আলী নামের আরেক চালক বলেন, “ঢাকায় আগে স্থানীয় চালকরাই রাইড শেয়ার করতো। এখন বাইরে থেকেও গাড়ি আসে। ফলে যানজট যেমন বাড়ছে, সেইসঙ্গে ভাড়ার পরিমাণও কমছে। আয় হয় না। আগে যদি ১৫০০ টাকা আয় হতো, এখন হয় এক হাজার। আর প্রতি ট্রিপে সময় ১০ থেকে ১৫ মিনিট বেশি লাগে।”