• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

আমদানি করা লিফট ও এস্কেলেটরে শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩, ০৪:৫৮ পিএম
আমদানি করা লিফট ও এস্কেলেটরে শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি করা লিফট ও এস্কেলেটরের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের রেয়াতি হারে কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেওয়ায় দেশের বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান লিফট উৎপাদন শুরু করেছে। তাদের আরও উৎসাহিত করতে সম্পূর্ণ তৈরি অবস্থায় আমদানি করা লিফট ও স্কিপ হয়েস্টস আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া কাঁচামালসংক্রান্ত উক্ত রেয়াতি প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ আাগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থাৎ দেশীয় লিফট উৎপাদনকারীরা ২০২৫ সাল পর্যন্ত কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াত পাবেন। সেই সঙ্গে এস্কেলেটর আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

এত দিন এস্কেলেটর মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত ছিল, কিন্তু পণ্যটি মূলত মূলধনী যন্ত্রপাতি নয়। সে কারণে এস্কেলেটর ও মুভিং ওয়াকওয়ে আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। একই সঙ্গে পণ্যটি মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এর আগে, বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।

বাজেট প্রস্তাবনায় কোন কোন পণ্যের ওপর কী পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বা কোন কোন পণ্যের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, তা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেটের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’ যেখানে মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখাসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থায় ভারসাম্য রক্ষা।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সুরক্ষায় বিলাসবহুল পণ্যে আমদানি নিরুৎসাহিত করছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “এ বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ছাড়া) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২০ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ১০ শতাংশ।”

অনুদানসহ আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৪ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বিপরীতে ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। তাতে নিট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয় ৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। যার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ও স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে ও অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ কোটি টাকা ধরছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে কর বাবদ ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ও কর ছাড়া ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে।

কর বাবদ যে রাজস্ব আসবে তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত কর ২০ হাজার কোটি টাকা।

Link copied!