• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ

রাজধানীজুড়ে আতংক


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৩, ০৪:৪৭ পিএম
রাজধানীজুড়ে আতংক
মুগ্দা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর পাশে স্বজনরা। ছবি-সংবাদ প্রকাশ

রাজধানীজুড়ে বড় আতংকের নাম এখন ডেঙ্গু। ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলোর ডাক্তার-নার্সরা।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মুগদা মেডিকেল হাসপাতালের ৮ তলায় শিশু ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।

নির্ধারিত শয্যা ছাড়িয়ে মেঝেতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক রোগী। এরই মাঝে চোখে পড়ে এক শয্যাতে দুই শিশুকে। যারা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। 

আক্রান্ত শিশুর স্বজনরা জানিয়েছেন, রোগীর চাপে এমন পরিস্থিতির শিকার তারা। সমস্যা হলেও চালিয়ে নিতে হচ্ছে।

হাসপাতাল পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) পূর্বের ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৬৬ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছে ১০৯। মৃত্যু তালিকাতে পাওয়া যায় ১ জন রোগীকে।

পরিসংখ্যান সূত্র বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ভর্তিকৃত রোগী বেড়েছে প্রায় ১২৫ জন। এর আগে গত শুক্রবার (২১ জুলাই) ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৪১ জন। আর একই দিনে ডেঙ্গু  আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ৪ জনের।

হাসপাতালের ৮তম তলার মেঝেতে একটি শয্যায় দুইজন শিশুকে নিয়ে বসে আছেন রাজধানীর গাউছিয়া এলাকার সোহেল মিয়া। একটি শিশু তার, অন্যটি অপরিচিত একজনের। 

কথা হলে তিনি বলেন, “বর্তমানে ডেঙ্গু’র সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে এক বেডে (শয্যা) দুইজন শিশুকে দিয়ে দিছে। আমার বেডেই দুইজন। আমার বাচ্চাটা আর আরেকজনের বাচ্চা আছে। আমার বাচ্চাটার প্রথমে জ¦র আসছে। তারপরে খিঁচুনি দেওয়া শুরু করে। গতকালকে ভর্তি করাইছি। এখন একটু সুস্থ হলেও জ¦র কিছুতেই থামছে না। এক বেডে দুইজন ভালো না লাগলেও সহ্য করতে হচ্ছে। কিছু করার নাই আর উপায়ও নাই। কারণ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়তেছে। পরিস্থিতির শিকার আমরা সকলে।”

এদিকে হাসপাতালে ভাইয়ের ছেলেকে ভর্তি করাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন লাকী নামে এক নারী। মুগদা হাসপাতালে রোগী দেখে চোখ যেন কপালে তার। তিনি বলেন, “আমার ভাইয়ের ছেলের বয়স ৩ বছর। আজকে চার-পাঁচদিন ধরে তার ডেঙ্গু। যেই হাসপাতালেই যাচ্ছি সিট পাচ্ছি না। বাংলাদেশে রোগী বেড়েগেছে।”

অপরদিকে, সালমা আক্তার তার বাচ্চাকে সম্পূর্ণ ঢেকে দিয়েছেন কম্বল দিয়ে। কথা হলে সালমা আক্তার জানান তিনি আতংকে আছেন। কান্না ভরা কন্ঠে সালমা বলেন, “প্রথমের দিকে তার রক্ত আস্তে আস্তে কমতেই আছে, এখন কমছে। আমি গত রোববার আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসছি। খুব একটা ভালো অবস্থা না। ডাক্তার বলছে রিপোর্ট দেখে তারপরে জানাবে। বলতে পারছি তাকে আইসিইউতে দেবে কি না। অনেক আতংকে আছি বাচ্চাটাকে নিয়ে।”  

এদিকে গত কয়েকদিন আগে কথা হয় মুগদা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “হাসপাতালে ৭টি বুথে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সকলকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে ডাক্তার এবং নার্সরা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। এর আগে রোগ পরীক্ষা করার বুথ ৫টি ছিল। পরে পর্যাক্রমে আরো দুইটি বুথ খোলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ডেঙ্গু বিশেষায়িত।”

Link copied!