• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

২৬ মার্চের কুমিরার যুদ্ধ


বাশার খান
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২২, ১১:৩২ এএম
২৬ মার্চের কুমিরার যুদ্ধ

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালিদের ওপর বর্বর আক্রমণ করে এবং নৃশংস গণহত্যা চালায়। ২৬ মার্চ সকালে হানাদার বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরা পুরো বাংলাদেশে আক্রমণ ও দখলদারত্ব নিয়ে পর্যালোচনায় বসে। সেখানে ঢাকায় অপারেশন নিয়ে তারা সন্তুষ্ট ছিল। বাঙালিদের প্রতিরোধের কারণে কয়েকটি শহর যেমন চট্টগ্রাম ও যশোরের পরিস্থিতি ছিল পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের জন্য ‘খুবই উদ্বেগজনক’।

চট্টগ্রামে বিদ্রোহী বাঙালি অফিসার ও সেনাদের প্রতিরোধের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা আতঙ্কিত ছিল। চট্টগ্রামের নাজুক অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য জিওসি জেনারেল টিক্কা খান ২৫ মার্চ রাতেই কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানরত ৫৩ ব্রিগেডের অধিনায়ক ইকবাল শফিকে নির্দেশ দেন, চট্টগ্রামে গিয়ে শহরটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য। চট্টগ্রামকে দখল ও সেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মার্চ বর্তমান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে রওনা হয় ইকবাল শফির কলাম। যতক্ষণ এই সেনাবহর এসে না পৌঁছায়, ততক্ষণ বালুচ রেজিমেন্টের পাকিস্তানি লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাতেমিকে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ফেনীতে এসে ইকবাল শফির বাহিনী থেমে যেতে বাধ্য হয়। কারণ, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী সেনারা ইকবাল শফির সেনাদলের অগ্রাভিযান প্রতিহত করতে, ইতোমধ্যেই মহাসড়কের শুভপুর সেতুটি উড়িয়ে দেয়। শুভপুর সেতু মেরামত না করে ইকবাল শফি চট্টগ্রামে যাওয়া সম্ভব ছিল না। শুভপুর সেতুর দখল নিতে পাকিস্তানি সৈন্যদের ২৬ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত লেগে যায়। অতঃপর সেনাদলটি চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। ব্রিগেডিয়ার শফির ব্রিগেড কলাম চট্টগ্রাম দখল করার অগ্রাভিযানের খবর পেয়ে বিদ্রোহী বাঙালি সেনাদের একটি দল শত্রুসেনাকে প্রতিরোধ করতে প্রস্তুতি নেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের হোল্ডিং কোম্পানির অধিনায়ক এবং তখনকার তরুণ বাঙালি ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভূঁইয়ার (পরে মেজর জেনারেল এবং সংসদ সদস্য) নেতৃত্বে একটি সেনাদল নিয়ে কুমিরার দিকে অগ্রসর হন।

যুদ্ধের কৌশল এবং ভৌগোলিক গুরুত্ব বিবেচনায় কুমিরা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে সাগর-পাহাড় বিধৌত একটি এলাকা। চট্টগ্রাম শহরের প্রতিরক্ষা ব্যূহ তৈরির জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। কুমিরার পশ্চিমে সাগর এবং পূর্বে পাহাড়। এর মাঝ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। মহাসড়ক হয়ে চট্টগ্রাম শহরে আক্রমণ ও নিয়ন্ত্রণের অভিমুখে এগিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ফাঁদে ফেলতে কুমিরাই ছিল খুবই উপযুক্ত স্থান। শত্রুর ডানে এবং বাঁয়ে প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধক, সে জন্য শত্রুকে এগোতে হলে পাকা সড়ক ছাড়া পথ নেই। তাই ১০২ জন সেনা নিয়ে কুমিরায় অ্যাম্বুশ স্থাপন করেন ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া।

‘মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস’ শীর্ষক গ্রন্থে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া সেদিনের স্মৃতিচারণায় লেখেন : 
‘তিনজন প্লাটুন কমান্ডারকে ডেকে খুব সংক্ষেপে আমার পরিকল্পনার কথা জানালাম এবং নিজ নিজ স্থানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পজিশন নেওয়ার নির্দেশ দিলাম। আমার নির্দেশ অনুযায়ী এইচএমজিটাকে ডান পাশে পাহাড়ের ঢালুতে ফিট করা হল। ইপিআর সুবেদার মুসা নিজে থাকলেন এই মেশিনগানটির দায়িত্বে। এই ভারী মেশিনগানটিই আমাদের প্রধান হাতিয়ার এবং সবচেয়ে বড় সম্বল। আমি রাস্তার বাম দিকে কয়েকটি এলএমজিএর পজিশন ঠিক করে দিলাম। আমার নির্দেশমতো সবাই মাটিতে পজিশন নিয়ে নিল। পজিশনের অবস্থা ছিল অনেকটা ইংরেজি U (ইউ)-এর মতো। অর্থাৎ ডানে, বাঁয়ে এবং পেছনে আমাদের সেনা। যেদিক থেকে পাকিস্তানি সৈন্যরা এগিয়ে আসছে কেবল সেই সামনের দিকটা খোলা।’ (মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস, পৃ. ৩০)

দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অগ্রাভিযানকে প্রতিরোধ করতে বাঙালি সেনাদের সঙ্গে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখেন কুমিরা এলাকার দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষ। সড়কে ছোট-বড় গাছ কেটে ফেলে রাখেন তারা। স্থানীয় মুক্তিকামী জনতার এই উদ্যোগ অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। সড়কে সমরাস্ত্রবিহীন এমন প্রতিরোধযুদ্ধ অতিক্রম করতে হিমশিম খেতে হয় অগ্রসরমাণ হানাদার বাহিনীকে।

এ নিয়ে অধ্যাপক হিরণ্ময় চক্রবর্তী তাঁর ‘কুমিরার যুদ্ধ’ প্রবন্ধে লিখেছেন : ‘বিকেল সোয়া পাঁচটায় পাঞ্জাব রেজিমেন্টের সৈন্যদের গাড়ির বহর এসে পৌঁছালো ছোট কুমিরায়।…কিন্তু ছোট কুমিরা পুলের সামনে জির গাছের ব্যারিকেড সরাতে না পেরে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে শ খানেক সৈন্য রেললাইন ধরে এবং বাকিরা ঢাকা ট্রাংক রোড দিয়ে পদব্রজে দুই সারিতে দক্ষিণ দিকে এগোতে লাগল।…সবার কাঁধে অত্যাধুনিক অস্ত্র। সন্ধ্যা যখন সোয়া সাতটা তখন পাকবাহিনীকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে দেখল বাংকারে থাকা ইপিআর সৈন্যরা।…শুরু হল শক্র নিধন পালা।…কুমিরা রাস্তার মাথায় যেতে না যেতেই বিকট আওয়াজে দক্ষিণ দিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি আসতে লাগল। কয়েকজনকে পড়ে যেতে দেখলাম।’ (সূত্র : শিশির ভট্টাচার্য্য, কুমিরার যুদ্ধ, bdnews24.com. ২৬ মার্চ ২০১৬)

কুমিরা যুদ্ধের কমান্ডার সুবিদ আলী ভূঁইয়ার লেখায় বাঙালি সেনাদের আক্রমণের তীব্রতা পাওয়া যায় :  ‘…সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় শত্রুরা যখন ব্যারিকেড সরাতে ব্যস্ত, তখন আমি ফায়ার করলাম। সাথে সাথে আমাদের ডান দিকের ভারী মেশিনগানটি গর্জে উঠল। শুরু হলো শত্রু নিধন পালা। চারিদিক থেকে কেবল গুলি আর গুলি। ভারী মেশিনগান থেকে মাঝে মাঝে উজ্জ্বল ট্রেসার রাউন্ড বের হচ্ছে। আমাদের আকস্মিক আক্রমণে শত্রুপক্ষ হতচকিত। ওদের সামনের কাতারের অনেকেই আমাদের গুলির আঘাতে লুটিয়ে পড়ল। সে কী ভয়াবহ দৃশ্য! তাদের কাতর আর্তনাদ আমাদের কানে আসছিল। আর যারা দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছিল তারাও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই শত্রুদের পেছনের সৈন্যরা এ অবস্থা সামলে নিয়ে মেশিনগান, মর্টার এবং আর্টিলারি থেকে অবিরাম গোলা বর্ষণ শুরু করে দিল। এভাবে কতক্ষণ চলল। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও শত্রুরা আমাদের ব্যূহ বেধ করতে পারল না। তাদের সৈন্যবোঝাই তিনটি ট্রাকে আগুন ধরে গেল। আমাদের মেশিনগানটা ‘নিউট্রালাইজ’ করার জন্য তারা প্রচুর পরিমাণ আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করতে লাগল। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানিতে শত্রুর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা প্রাণপণ লড়ে তারা শেষ পর্যন্ত দুই ট্রাক অস্ত্র ফেলে পিছু হটতে বাধ্য হলো।’ (মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস, পৃ. ৩১)
কাছ থেকে এই প্রতিরোধ যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসী কানাই লাল চক্রবর্তী

পরে স্মৃতিকথায় তিনি লিখেন :  ‘…হঠাৎ বিকট শব্দ ট্র-ট্র-ট্র-ট্র-ট্র-ট্র-ট্র-ঢুম্-শোঁ-শোঁ, শোঁ-শোঁ। এতগুলি আওয়াজ ও এত অগ্নিকণা আর দেখি বা শুনি নাই।...প্রথম দিকে গুলি শুধু উত্তরাভিমুখে গিয়াছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে অনবরত গুলি শুরু হইল এবং গুলি যে কোন দিক হইতে পড়ে তাহা বুঝা মুস্কিল।…হঠাৎ শোঁ করিয়া একটি গুলি আসিয়া আমার চায়ের ঘর ভেদ করিয়া ঢেঁকি ঘরে গিয়া পড়িল।’ (কানাই লাল চক্রবর্ত্তী, ১৯৭১- শরণার্থীর দিনলিপি, পৃ. ১৯) দুঃসাহসী এই অ্যাম্বুশে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সেনারা বড় সফলতা পান। অ্যাম্বুশে পাকিস্তান আর্মির ১৫২ জন সেনা নিহত হয়। আরও বড় ব্যাপার ছিল যে, এতে পাকিস্তানি কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল শাহপুর খান মারা যায়। পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে পালিয়ে গিয়ে ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফি প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হন।
এই আক্রমণে বিপর্যস্ত ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফির সেনাদল হেডকোয়ার্টের সঙ্গে সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ৭১-এ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৪ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার ‘A Stranger in My Own Country : East Pakistan, 1969-1971’ শীর্ষক বইয়ে পাওয়া যায়, ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের উপকণ্ঠে তৎকালীন বিদ্রোহী বাঙালি সেনাদের কর্তৃক দুর্ধর্ষ অ্যাম্বুশে, ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফির চৌকস ব্রিগেড কলাম বিপর্যস্ত হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা লিখেছেন, ‘ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফির কলামের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।...বিদ্রোহী সৈন্যদের কারণে তাদের থামতে হয়েছিল।’ (সূত্র : ১৯৭১-শত্রু ও মিত্রের কলমে, মতিউর সম্পাদিত, পৃ. ২৩-২৫)

কুমিরার যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও তীব্রতায় কেঁপে ওঠে পাকিস্তানি আর্মির ঢাকার হেডকোয়ার্টার। ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে হেডকোয়ার্টারের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল কুমিরা। এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যায় যুদ্ধকালীন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ও পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে নিয়াজীর পাবলিক রিলেশন অফিসার মেজর সিদ্দিক সালিকের বয়ানে। বহুল আলোচিত Witness to Surrender গ্রন্থে সিদ্দিক সালিক লেখেন :
‘…এই সেনাদলটির (ইকবাল শফির সেনাদল) ভাগ্য সম্পর্কে ঢাকা শঙ্কিত হয়ে পড়ে, সম্ভবত এদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া সেনাদলটির সন্ধান নিজেই নেবেন বলে জিওসি সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন তিনি হেলিকপ্টার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।…যখন তারা কুমিরার কাছাকাছি আসেন…পাইলটকে মেঘ ভেদ করে নীচে নামতে বলেন। হেলিকপ্টারটি নিচে নামতেই…একঝাঁক গুলি লাফিয়ে উঠল। …মিশন ব্যর্থ হল।’ (সিদ্দিক সালিক, নিয়াজির আত্মসমর্পণের দলিল, মাসুদুল হক অনূদিত, পৃ. ৮৩-৯৪)

কুমিরার যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যুদ্ধটির ফলাফল সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধে ১ নং সেক্টরের কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম লিখেছেন :
‘এই সংঘর্ষের পর ঢাকায় ১৪ ডিভিশনের কর্নেল স্টাফের সাথে চট্টগ্রাম থেকে কোনো একজন পাকিস্তানি সামরিক অফিসার ওয়্যারলেসে যে জরুরি কথা বলছিল, সেসব ইন্টারসেপ্টেড হয়। চট্টগ্রামের অফিসার বলছিল : আমাদের অনেক হতাহত হয়েছে।…বিমানে সৈন্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য হতাহতের জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার।’ (রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, পৃ. ১২১)

বাঙালিদের প্রতিরোধ যুদ্ধের শুরুর পর্বে তুলনামূলক খুবই কম সৈন্যসংখ্যা এবং অস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানিদের এত বিশাল একটি বাহিনীকে আক্রমণ করাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। একটু এদিক-সেদিক হলেই বাঙালি সেনাদের সবাই নিহত হতে পারতেন। অত্যন্ত দক্ষতা, দুঃসাহস, বুক পেতে দেওয়া দেশপ্রেম—এ তিনের সমন্বয় ছিল বলেই কুমিরার যুদ্ধে সুবিদ আলী ভূঁইয়া ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বাঙালি সেনারা সফল হন। এই যুদ্ধের ফলাফল ওই সময় এবং এর পরে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখে। যুদ্ধটির মূল্যায়নে রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম বলেন, ‘কুমিরায় পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সফল এই অ্যাম্বুশ ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এবং এর প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। পাকিস্তানি সৈন্যরা বিনা বাধায়, অনায়াসে চট্টগ্রাম দখল নেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল, কুমিরায় আমাদের সময়োচিত অ্যাম্বুশে তা সম্পূর্ণ নস্যাৎ হয়ে যায়।’ (লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, পৃ. ঐ)

লেখক : সাংবাদিক এবং গবেষক

Link copied!