পৃথিবীতে কত ধরনের মানুষ রয়েছে! শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী মানুষও পৃথিবীতে সংগ্রাম করে চলছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজের পরিচয় বানাতে তারা সাধারণদের চেয় আরও একধাপ এগিয়ে থাকেন। এমনই একজন হলেন ইতালির পেরুজ্জিয়া শহরের কিশোরী ফ্রাঞ্চেসকা। দুই হাত ও এক পা ছাড়াই বিশ্বজয়ের চেষ্টায় নেমেছেন এই কিশোরী। নিজ ঘরেই প্রতিনিয়ত করছেন অনুশীলন। পাশাপাশি স্থানীয় জিমে গিয়েও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এই কিশোরী।
জীবন সংগ্রামী এই কিশোরী স্বপ্ন দেখেছেন। স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টাও করেছেন। পুরো কাজে পরিবার থেকে সহযোগিতাও পেয়েছেন। কিশোরী ফ্রাঞ্চেসকার মা আবেগ আপ্লুত হয়ে মেয়ের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
ডয়েলচে ভেল-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সেই গল্পই তুলে ধরা হয়। ফ্রাঞ্চেসকার মা বলেন, “ঘুম থেকে উঠে এসেই আমার মেয়ে বলে, ‘মা, আমি অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হবো।’ শুনে অবাক হলেও বিরক্ত হইনি। বরং আমার মেয়ে এমন একটা স্বপ্ন দেখতে পারছে তা শুনেই খুশিই হয়েছিলাম।”
ফ্রাঞ্চেসকার মা জানান, দুই হাত আর এক পা ছাড়াই ফ্রাঞ্চেসকার জন্ম হয়েছে। পায়ের একটা অংশ না থাকায় নকল পা লাগানো হয়েছে। কিন্তু নকল কবজি লাগানোর পরও তা ব্যবহার করেননি ফ্রাঞ্চেসকা। তারপরও অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হওয়ার স্বপ্নকে পূরণ করেছেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ফ্রাঞ্চেসকা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও মানুষ বিশ্ব জয় করতে পারে তারই প্রমাণ দিয়েছেন এই কিশোরী। হাত বা পা ছাড়া অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার হওয়ার স্বপ্ন কম মানুষই ভাবতে পারেন। তাই এই প্রতিযোগিতায় ফ্রাঞ্চেসকার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না।
প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ফ্রাঞ্চেসকা সাধারণ মেয়েদের মতোই সাজতে পছন্দ করেন।তারও ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার পছন্দ। পপ গান শুনতে ভালোবাসেন। গলায় কালো নেকলেস পরতে ভালোবাসেন। সেই সঙ্গে হ্যারি পটারের ভক্ত ফ্রাঞ্চেসকা।
সাধারণ কোনো অ্যাক্রোবেটিক পোল ড্যান্সার নন, বরং ফ্রাঞ্চেসকা চেয়েছেন এতে পারদর্শী হতে। লক্ষ্য সাধারণ হলে হয়তো এতদিনে হারিয়ে যেতেন। কিন্তু মেয়েটির শেখার আগ্রহ অনেক। নিজের ঘরে অনুশীলন করেছেন এবং কোচ এলেনা ইম্ব্রোনিয়োর কাছে স্থানীয় জিমে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
ফ্রাঞ্চেসকার মা বলেন, “আমার মেয়েটি জানে, সফল হতে হলে নিরলস পরিশ্রমে আস্থা রাখতে হবে তাকে।”