শিশুকালই সব মানুষের একমাত্র সময়, যে বয়সে মানুষ সবচেয়ে সুন্দর জীবনটা কাটায়। বয়স বাড়তে বাড়তেই তো বাস্তবতা আর জীবনের হিসাব-নিকাশে জর্জরিত হয়ে পড়তে হয়। শিশুকালে সব বাচ্চাই একটু-আধটু দুষ্টুমি করে, সে ক্ষেত্রে একটু প্রশ্রয় দিতে বাধা নেই। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে তা যেন মাত্রাছাড়া না হয়। ঠিক সময়ে রাশ না ধরলে পরবর্তীকালে এটাই অনেক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয়।
- মা-বাবাই সন্তানের প্রথম শিক্ষক। তাই বাচ্চাকে কোনোরকম নির্দেশ দেওয়ার আগে নিজেও সেটা পালন করুন।
- বাড়ির বড়রা অনেক সময় শিশুর সামনেই চিৎকার করে ঝগড়া করেন, একে অপরকে দোষারোপ করেন, রাগের বশে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলেন, সন্তান কিন্তু এ ধরনের অভ্যাস রপ্ত করে ফেলতে পারে।
- সব বাচ্চাই একরকম হয় না। তাই প্রথমেই বাচ্চাকে ভালো করে বোঝার চেষ্টা করুন। খেলতে গিয়ে কাচ ভেঙে ফেলা বা কোনো জিনিস নষ্ট করা কিন্তু এক নয়। প্রথমবার সাবধান করা জরুরি। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে শাসনের প্রয়োজন আছে। বাচ্চাকে দুষ্টুমির খারাপ দিকগুলো বোঝান। ভালো-মন্দের বোধ ছোটবেলা থেকেই মনের মধ্যে গেঁথে দিন।
- ছোটদের ছোট ছোট চাহিদাগুলো খেয়াল রাখুন। কিন্তু তাই বলে যখন যা আবদার করবে তা-ই কিনে দেবেন না। দুষ্টুমি কমাতে যদি খেলনা কিনে দেন, তা হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাকে আদর করুন, বায়না মেটান। কিন্তু অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেবেন না।
- বাচ্চারা কেন দুষ্টুমি করছে, তা বোঝার চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চারা বাড়ির সব সদস্যের কাছ থেকে গুরুত্ব পেতে নানা রকমের দুষ্টুমিতে মেতে ওঠে। প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় দুজনে একসঙ্গে সন্তানের সঙ্গে কাটান। পরিবারের সবাই মিলে নানা রকম গেম খেলুন। দেখবেন আপনার সন্তান দারুণ উপভোগ করছে।
- সন্তান দুষ্টুমি করলে ওকে ঠান্ডা মাথায় বোঝান। অন্য কারোর উপস্থিতিতে বাচ্চাকে বকবেন না। এতে বাচ্চার আত্মসম্মান বোধে লাগবে। কারণ, বাচ্চাদের আত্মসম্মান বোধ প্রবল।
বাচ্চা একটু বড় হয়ে গেলে ওকে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। জামাকাপড় বা খেলাধুলো নিজের পছন্দমতো বাছতে দিন। ঘরের ছোটখাটো কাজের দায়িত্ব দিন। পাশাপাশি ডিসিপ্লিন গড়ে তুলুন। ছোটবেলা থেকে নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে থাকলে সন্তানের আত্মনিয়ন্ত্রণ গড়ে ওঠে।