বিয়ের পর দুজন মানুষের নতুন পথচলা শুরু হয়। ভালোবাসা, সহযোগিতা, শ্রদ্ধা, যত্নের মধ্য দিয়ে একে অন্যের সঙ্গ উপভোগ করে। প্রতিটি মুহূর্তই তখন রঙিন মনে হয়। ঘরে, বাইরে সবখানেই প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে থাকে। বিয়ের কয়েক মাস বা বছর গড়াতেই সংসারে নতুন সদস্য আসে। প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। দায়িত্ব বেড়ে যায়। সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে করতে নিজেদের মধ্যে ভালোলাগার বিষয়গুলো হারিয়ে যায়। যদিও সন্তানই তখন ভালোলাগা আর ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে। কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে একান্ত সময় ছিল কিংবা যে সময়গুলো তারা উপভোগ করতেন তা খানিকটা হারিয়ে যায়।
দাম্পত্য সুখী করার শর্ত হলো একে অপরকে সুখী করা। সংসারে ভালোবাসা থাকে আবার ঝামেলা-অশান্তিও থাকে। মান-অভিমানও চলে। অনেকের ধারণা, সন্তান জন্মের পর স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এসব সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সন্তান লালন পালনে স্বামী স্ত্রী দুজনকেই দায়িত্ব পালন করতে হয়। হঠাত্ বড় দায়িত্ব চেপে বসে, যা সামলে নিতে প্রথমদিকে দুজনই হিমশিম খেয়ে যান। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সব সামলে নেন। তবে এই সময়ের মাঝেই স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে কিছুটা দূরত্ব হতে পারে। একান্তে সময় না কাটানো, রোম্যান্স কমে যাওয়া, সঙ্গীর প্রতি নজর না দেওয়াসহ নানা কারণে এমনটা হতে পারে।
কিন্তু সব ক্ষেত্রে এমনটা নাও হতে পারে। কিছুক্ষেত্রে ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়। সংসারে দায়িত্বকে দুজনই উপভোগ করেন এবং একে অপরের সহযোগী হয়ে পাশে থাকেন। তাই যাদের সন্তান জন্মের পর দাম্পত্য সম্পর্কে সমস্যা বেড়েছে তাদের কিছু বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
মনের কথা জানুন
সঙ্গীর মনে কী চলছে কিংবা সঙ্গী কী চাচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। সঙ্গীর মন ভালো রাখার চেষ্টা করুন। ভালবাসা দিয়ে সঙ্গীর মন জয় করুন। বিশেষ মুহূর্তে বা দিনে সঙ্গীকে সারপ্রাইজ় করুন। তার প্রশংসা করতে ভুলবেন না। সন্তানকে নিয়েই বাইরে ঘুরে আসুন। আপনি সম্পর্কে যত্নবান হলে আপনার সঙ্গীও হবে। সঙ্গীর মনের কথা বুঝে নিলে অনেক সমস্যাই সমাধান হয়ে যাবে।
একান্ত সময়
সন্তানকে দেখভাল করে একান্তে সময় কাটানোই হচ্ছে না? এটা সম্পর্কের দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। তাই সবকিছুর মাঝেই সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটান। প্রতিদিনের ছোট ছোট বিষয়গুলো শেয়ার করুন। একে-অপরের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিন। দিনে বা রাতে কিছু সময় বরাদ্দ রাখুন শুধুমাত্র সঙ্গীর জন্যই। সন্তানকে সময় দেওয়ার ফাঁকে দাম্পত্য ঠিক রাখতে একান্ত সময় কাটানো জরুরি।
সঙ্গীকে মূল্যায়ন করুন
সম্পর্ককে সম্মান জানিয়ে সঙ্গীকে মূল্যায়ন করতে হবে। সঙ্গীর কাজের প্রশংসা করুন। ভালো কাজের জন্য সঙ্গীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। তাকে উত্সাহ দিন। সংসারকে সুন্দর করে গুছিয়ে ও সাজিয়ে রাখতে তার অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। এতে সঙ্গীও অনেক আন্তরিক হবে।
একসঙ্গে কাজ করুন
সংসারের কাজগুলো একসঙ্গে করার চেষ্টা করুন। যখনই সময় পাবেন সঙ্গীকে কাজে সহযোগিতা করুন। এতে একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগও হবে। আবার বাড়ির কাজের বাইরে একসঙ্গে বাজার করতে যেতে পারেন। এছাড়াও জিমে যাওয়া, সুইমিং করা, হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। এতে দুজনই সময়টাকে উপভোগ করবেন।
বিবাদ ভুলে যান
সম্পর্ক সুন্দর রাখতে বিবাদকে মনে পুষে রাখলে চলবে না। বরং বিবাদ ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। পুরনো কোনও সমস্যা বা বিবাদকে বর্তমান সময়ে করা ঝগড়ার মাঝে টেনেও আনবেন না। সঙ্গীর ছোট ছোট ভুল ক্ষমাও করে দিতে পারেন। এতে দাম্পত্য জীবন স্থায়ী হবে।
















-20251222091605.jpeg)






















