• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আমাদের বিবেকের জাগরণ দরকার : যতীন সরকার


সুব্রত চন্দ
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২১, ০৩:০৮ পিএম
আমাদের বিবেকের জাগরণ দরকার : যতীন সরকার
অধ্যাপক যতীন সরকার, বাংলাদেশের একজন প্রগতিশীল চিন্তাবিদ ও লেখক। ১৯৬০-এর দশক থেকে তিনি ময়মনসিংহ শহরের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। ২০১০ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন তিনি। নতুন বছরের প্রত্যাশা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে কথা বলেছেন যতীন সরকার। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সুব্রত চন্দ।

সংবাদ প্রকাশ: আপনার দৃষ্টিতে কেমন গেল ২০২১ সাল?

অধ্যাপক যতীন সরকার: আমার দৃষ্টিতে ২০২১ সাল বরাবরের মতোই ভালোমন্দে মিশ্রিত। আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, পদ্মা সেতুর কাজ প্রায় সমাপ্ত হয়ে গেছে। এগুলো ভালো কাজ। কিন্তু প্রবৃদ্ধি যেখানে বাড়ছে, সেখানে বৈষম্যও বেড়েছে। কাজেই ২০২১ সালে বৈষম্য বাড়াটা একটা খারাপ দিকই বলতে হবে এবং বরাবরই বেড়ে যাচ্ছে। প্রচুর টাকা দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই যে বিষয়গুলো, এগুলোকে কোনোভাবেই ভালো বলা যাবে না। কাজেই নানা রকম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এগুলোর দ্বারা তৈরি হয়। আর করোনা তো সারা বিশ্বই ছারখার করে দিচ্ছে। এখন ওমিক্রনেও নাকি ২০২১ সালে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছে। এ সমস্ত কারণে সবাই একটা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে।

সংবাদ প্রকাশ: নতুন বছরে আপনার প্রত্যাশা কী?

অধ্যাপক যতীন সরকার: নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা তো অনেক। প্রত্যাশা হলো আমি ২০২১ সালে আমাদের দেশে যেসব নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে, করোনার যে তৃতীয় ঢেউ আসছে ওমিক্রন, সেটা থেকে যেন আমরা রক্ষা পেতে পারি, সেই ব্যবস্থা হোক। আর বৈষম্য কমে যাক, এগুলোই আমার প্রত্যাশা।

সংবাদ প্রকাশ: চলতি বছর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে যে সহিংসতা ও হানাহানি ঘটল, সেটাকে আপনি কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?

অধ্যাপক যতীন সরকার: এই যে হানাহানির যে ঘটনা ঘটেছে, এটা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে এখন। সেই আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যেই মারামারি করছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। প্রতিদিনই খবর পাওয়া যাচ্ছে, একজন জিতল তাকে, যে হারল তাকেও মেরে ফেলা হবে। এই সমস্ত ঘটনা সুখবর তো নয়ই, এ ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনটা আসলে হওয়া উচিত এমনিতে, পার্টির ভিত্তিতে হওয়া উচিত নয়। দলের ভিত্তিতে না হয়ে, এমনিতে যদি নির্বাচন হতো, তাহলে হয়তো বিষয়গুলো আরও স্বস্তিকর হতো বলে আমি মনে করি।

সংবাদ প্রকাশ: শিক্ষাঙ্গনে শারীরিকভাবে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে ফের অনললাইন ক্লাসের ওপর শিক্ষার্থীদের নির্ভরশীল হতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এটা কতখানি প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক যতীন সরকার: এটার প্রভাব তো অনেক বেশি পড়বে। এই ব্যাপারে কোনো ব্যক্তি বিশেষকে দায়ী করা চলে না। এখন এমনিতেই তো আমাদের শিক্ষা খাতের অবস্থা ভালো না। করোনা সেটা আরও বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। কাজেই এমন পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করা ভালো। যেভাবেই হোক শিক্ষাব্যবস্থাটা যাতে চালু থাকে, সেই ব্যবস্থাটা অবশ্যই করতে হবে।

সংবাদ প্রকাশ: চলমান অস্থির সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে আপনার পরামর্শ কী?

অধ্যাপক যতীন সরকার: চলমান অস্থির সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে বিবেকের জাগরণ দরকার। সেই বিবেকের জাগরণ আমাদের মধ্যে হচ্ছে না। যদি বিবেকের জাগরণ হয়, তাহলে এই ধরনের অনেক বিষয় থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
 

কথাপ্রকাশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!