• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

স্ত্রীর গর্ভধারণে তান্ত্রিকের পরামর্শে কন্যা শিশুর ‘নরবলি’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০৪:৪৭ পিএম
স্ত্রীর গর্ভধারণে তান্ত্রিকের পরামর্শে কন্যা শিশুর ‘নরবলি’

ভারতের কলকাতায় সাত বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে দক্ষিণ পূর্ব কলকাতার তিলজলা এলাকায় মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ক্ষোভ দেখা দেওয়ায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে ওই কন্যা শিশুটির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ তাদেরই এক প্রতিবেশীর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, তান্ত্রিকের পরামর্শেই সাত বছর বয়সী শিশুটিকে নরবলি দিয়েছিলেন তার প্রতিবেশী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো টুইটারে লিখেছেন, “ওই রাজ্যের ডিজিপি এবং মুখ্য সচিবের কাছে আমরা নোটিশ পাঠাচ্ছি। আমাদের একটি প্রতিনিধিদল এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছেন।”

ওই হত্যাকাণ্ডের পরের দিন তিলজলা এলাকায় যে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া কমিশনের উদ্যোগে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই শিশুটির পরিবারকে আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

রাজ্য পুলিশ বলছে, তারা শিশুটির হত্যাকারী অলোক কুমারকে গ্রেপ্তার করার পর জিজ্ঞাসাবাদে উত্তর কলকাতার নিমতলা এলাকার এক তান্ত্রিকের কথা জানতে পেরেছে। ওই তান্ত্রিকের পরামর্শেই তিনি সাত বছর বয়সী শিশুটিকে নরবলি দিয়েছিলেন। স্ত্রী গর্ভধারণ করতে না পারায় ওই তান্ত্রিকের পরামর্শ নিয়েছিলেন তিনি। তান্ত্রিক কুমারকে বলেছিল, হিন্দু উৎসব রামনবমীর আগে পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সী কোনো শিশুকন্যাকে বলি দিতে পারলে তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তান আসবে।

যদিও তন্ত্রসাধনার অন্যতম পীঠস্থান বলে পরিচিত হিন্দু তীর্থক্ষেত্র ‘তারাপীঠের’ পূজারিরা জানিয়েছেন, তান্ত্রিক মতে কোথাও নরবলি দেওয়ার বিধান নেই।

তারাপীঠ মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত তারাময় মুখার্জী বিবিসিকে বলেন, “মাঝে মাঝেই সংবাদমাধ্যমে দেখা যায় কোনো ইচ্ছাপূরণের জন্য নরবলি বা শিশু বলি দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু অমানবিক নয়, জঘন্য অপরাধ। তন্ত্রমতে সাধনায় কোথাও নরবলি দেওয়ার বিধান নেই। যেসব তান্ত্রিক নরবলি বা শিশু বলি দেওয়ার বিধান দেয়, তারা বুজরুকি করে। তাদের নিশ্চিত অন্য কোনো মতলব আছে। কোনো মানুষকে হত্যা করে কারও ভাল হতে পারে না। এটা কখনই মাতৃ আরাধনা নয়।”

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই শিশুকন্যাকে হত্যা করার পরে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আলাদা করে নেওয়া হয়, সেগুলি দিয়ে তন্ত্রসাধনা করে পূজা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল হত্যাকারীর।

এর গত রোববার সকালে নিজের বাড়ির সামনে থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় সাত বছর বয়সী ওই কন্যা শিশুটি। শিশুটির মা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, রোববার তিনি মেয়েকে বাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলতে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরে সে আর বাড়ি ফেরেনি।

Link copied!