মেক্সিকোতে তীব্র তাপপ্রবাহে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে অতিরিক্ত গরমে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে মেক্সিকোর বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির (১২২ ফারেনহাইট) কাছাকাছি ছিল। যার ফলে প্রচণ্ড গরমে ১০০ জন মারা গেছেন।
এই মাসে তিন সপ্তাহব্যাপী তীব্র এ তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে চাপের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কর্তৃপক্ষকে কিছু এলাকায় স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, প্রাণহানির তিনভাগের দুইভাগ ঘটনা ঘটেছে গত ১৮-২৪ জুনের মধ্যে। বাকি একভাগ তার আগের সপ্তাহে। গত বছরের এই সময়ে তাপপ্রবাহে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছিল।
মৃতদের অধিকাংশই হিট স্ট্রোক ও পানিশূন্যতায় মারা গেছেন। এরমধ্যে ৬৪ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে টেক্সাসের সীমান্তবর্তী উত্তরের রাজ্য নিউভো লিওনে। বাকিদের বেশিরভাগই উপসাগরীয় উপকূলে প্রতিবেশী তামাউলিপাস এবং ভেরাক্রুজে।
তবে বিগত কয়েকদিনে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কমেছে। তবে এখনো দেশটির উত্তরাঞ্চলের কিছু শহরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। বুধবার দেশটির সোনোরা রাজ্যের অ্যাকোনচি শহরের তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।
বিজ্ঞানীদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে প্রতিকূল আবহাওয়া আরও মারাত্মক হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত প্যানেল সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এ আশঙ্কা উত্থাপন করে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রতিটি ডিগ্রি তাপমাত্রা বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলবে।
জাতিসংঘের আন্তঃসরকারি সংস্থা প্যানেল অব ক্লাইমেট চেঞ্জের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক সতর্কবার্তায় বলেছেন, দ্রুতহারে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জেরে বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া ক্রমেই চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠছে এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে খরা, তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতাও বাড়ছে।
জাতিসংঘ মে মাসে একটি সতর্কতা জারি করে বলেছে, ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম সময়কাল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন এবং এল নিনোর সংমিশ্রণে তাপমাত্রা অনেক বাড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :