ভারতের লোকসভা নির্বাচন আগামী বছর। আর সেই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি ভারতের জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিত্বকে প্রচারণা কাজে প্রধান হাতিয়ার বানাতে চায়। এ জন্য দলটি একটি প্রস্তাব এনেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনন্দবাজার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জি-২০ সম্মেলনে সফলভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়। সেই সঙ্গে একটি প্রস্তাবও নিয়েছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই প্রস্তাব মেনেই লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার চালাতে হবে। প্রত্যেক নেতাকে নিজের রাজ্যে প্রচারণার সময় এই বিষয়গুলো আলোকপাত করতে হবে।
দুই পাতার প্রস্তাবের প্রথম থেকেই মোদির প্রশংসা রয়েছে। বলা হয়েছে, গত ৯-১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে যে সম্মেলন হয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী যে ভূমিকা নিয়েছেন, তা ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উম্মোচন করেছে। এই সম্মেলন বর্তমান ভারতের পাশাপাশি আগামীর জন্যও কাজের হবে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। মোদির নেতৃত্বে আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি-২০ এ অন্তর্ভুক্ত করার সাফল্য আগামী প্রজন্মও মনে রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবে।
জি-২০ সম্মেলন নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কথা বিজেপির নেতারা সরাসরি স্বীকার করছেন না। তবে ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা সব বক্তৃতায় দিল্লি সম্মেলনের সফলতার কথা বলতে শুরু করেছেন। কংগ্রেস শাসনামলে বিশ্বে ভারতের এমন স্থান তৈরি হয়নি বলেও প্রচার করা হচ্ছে।
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই প্রসঙ্গে বলেন, “এটা নিয়ে প্রচারের দরকার নেই। গোটা দেশ দেখেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা কীভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা দেখিয়েছেন। ভারত যে বিশ্বের দরবারে গুরুত্ব পাচ্ছে, এটা তো অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই। যারা এসেছিলেন সবাই মোদীজির নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। আর এই গর্ব তো শুধু বিজেপির নয়, এটা গোটা দেশের।”
আর দলটির সাবেক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সেই ছোটবেলা থেকে আমরা বলে এসেছি ‘ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’। অতুলপ্রসাদ সেনের সেই বাণী যে এত দিন পরে সফল হয়েছে, তারই প্রমাণ দেখা গিয়েছে জি-২০ সম্মেলনে।’’
লোকসভা নির্বাচনে জি-২০ সম্মেলনের প্রভাব নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘সবকিছুই কি ভোটের দিকে তাকিয়ে করতে হয় না কি! বিজেপির কাছে দলের আগেও রাষ্ট্র। ভারতের সম্মান বাড়ানোর কাজটাই হয়েছে। ভারত যে ‘বিশ্বগুরু’ তা এ বার নতুন করে প্রতিষ্ঠিত।’’
জাতীয় পর্যায়ে বিজেপি যে এই সম্মেলনের সাফল্যকে নির্বাচনে হাতিয়ার করতে চাইছে, তার ইঙ্গিত বুধবার দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, দীর্ঘদিন জি-২০ দেখছেন তিনি। কিন্তু এবারের মতো ‘সফল সম্মেলন’ আগে হয়নি।
নরেন্দ্র মোদিই বিজেপির মুখ। গত দুটি লোকসভা নির্বাচন ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মোদিকে সামনে রেখেই লড়াই করেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নতুন সংযোজন হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন। ‘মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ স্লোগান নিয়ে ইতোমধ্যেই সম্মেলনের ছবি, বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে মোদির শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভিডিও নিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে দলটি।