• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গাজায় স্কুলে হামলায় প্রাণহানি ৭০


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৪, ০৮:১০ এএম
গাজায় স্কুলে হামলায় প্রাণহানি ৭০

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এ নিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা পৌনে ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে।

আল-আহলি হাসপাতালের প্রধান ফাদল নাঈম বলেন, হামলার পর হতাহত অনেককে এখানে আনা হয়। নিহত অনেকের দেহাবশেষ এতোটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব ছিল না।

একজন ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেন, “আল-তাবাঈন নামে যে স্কুলে তারা হামলা চালিয়েছে সেখানে হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের লোকজন ছিল।” তবে ইসরায়েলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে হামাস।

গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় এ ধরনের বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

জাতিসংঘের মতে, গাজার ৫৬৪টি স্কুল ভবনের মধ্যে ৪৭৭টি ৬ জুলাই পর্যন্ত সরাসরি আঘাত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারপর থেকে এক ডজনেরও বেশি লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

আল-তাবাঈন স্কুলে এক হাজারেরও বেশি লোক ছিল। সম্প্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরে বেইত হানুন শহর থেকে কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত লোককে পেয়েছিল। ভবনটি একটি মসজিদ হিসেবেও কাজ করত এবং ভোরের নামাজের সময় ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়।

স্কুলের পাশের বাসিন্দা জাফর ত্বহা নামে এক ছাত্র বলেন, বোমা হামলার শব্দের পর চিৎকার ও আওয়াজ হয়। ‘আমাদের বাঁচাও, বাঁচাও‍‍` বলে তারা চিৎকার করছিল।’

জাফর ত্বহা বলেন, “দৃশ্যটি ছিল ভয়ঙ্কর। সর্বত্র শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং দেয়াল ঢেকে রাখা রক্ত।”

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র সেলিম ওয়েইস বলেছেন, “হামলাটি ছিল সত্যিই আপত্তিকর। এই সমস্ত স্কুল সত্যিই বেসামরিক, শিশু, মা এবং পরিবারে পরিপূর্ণ, যারা স্কুল বা মসজিদ যাই হোক না কেন, এমনকি হাসপাতালের আঙিনায় যেকোনো ফাঁকা জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে।”

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার জবাবে উপত্যকায় প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় নিহত হয় ১২ শর মতো ইসরায়েলি। ওইদিন দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসেন সশস্ত্র ফিলিস্তিনিরা।

ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু দখলদার দেশ ইসরায়েল। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ কিংবা গির্জার মতো বেসামরিক স্থাপনা।

১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৭৯০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯২ হাজার ০২ জন।

হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও কয়েক হাজার লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

Link copied!