শীত আসতেই বেড়ে যায় নিউমোনিয়ার সমস্যা। আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, নিউমোনিয়া শুধু ছোটদেরই হয়! এই ধারণা ভুল। ছোট-বড় সবারই অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে নিউমোনিয়া হতে পারে। তবে বিশেষ করে শিশুরা এ সমস্যায় বেশি ভুগে থাকে।
নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের সংক্রমণজনিত একটি রোগ। এই রোগ সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। তবে কখনো ফুসফুসে ছত্রাকের সংক্রমণের ফলেও নিউমোনিয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় মোট যত সংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয় তার ১৫ শতাংশই শিশু, যাদের বয়স পাঁচ বছর বা তারও কম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসে বাড়তে থাকা দূষণ শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। যেহেতু শীতে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় ও আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে, তাই শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায়। তাই এ সময়টাতে শিশুর জ্বর, অনর্গল খুসখুসে কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, শ্বাসের সঙ্গে বুকে ব্যথা, মাথায় যন্ত্রণা, শরীর দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অনীহা, সব সময় বমি বমি ভাব এধরনের লক্ষণ দেখলেই সচেতন হন।
এই শীতে নিউমোনিয়া থেকে দূরে রােখতে যেভাবে শিশুর যত্ন নেবেন-
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন নিন। তাহলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যাবে।
- নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে আপনার সন্তানকে দূরে রাখুন। হাঁচি-কাশি হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
- সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাতে হবে। শিশু বাইরে থেকে আসলে হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে দিন। এ ছাড়াও খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে।
- শীত যেহেতু নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেশি থাকে তাই শিশুকে ভিড়ের মধ্যে যেতে দেবেন না।
- ৬ মাসের কম এমন শিশুরা যদি বুকের দুধ পান করে, তাহলে সে নিউমোনিয়ার জীবাণু অনেকটাই প্রতিহত করতে পারবে।
- ৬ মোসের বেশি শিশুদেরকে মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার হিসেবে দেশীয় খাবার, যেমন- খিচুড়ি, দেশি ফলমূল, শাকসবজি খাওয়াতে হবে।
- অপুষ্টির কারণেও শিশুর ঘন ঘন নিউমোনিয়া হতে পারে। তাই শিশুর পুষ্টির দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
- নিউমোনিয়ার হাত থেকে বাঁচাতে শিশুকে গোসল কারানোর সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। পানিতে জীবাণুনাশক মেশাতে ভুলবেন না।
- শীতে শিশুর ডায়াপার ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে। ভেজা ডায়াপার দীর্ঘক্ষণ পরে থাকলে অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে।
- ঠান্ডা লেগে শিশুর নাক বন্ধ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেজাল ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র: ইউনিসেফ/জি নিউজ