খাবারের প্রতি শিশুর অনীহা ভাব কাটাতে প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে। তা না হলে শিশুর মুখের স্বাদ অনুভূতি গড়ে ওঠার সময় সে খাবারের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে হবে। তবে কিছু উপায় আছে, যেগুলো অবলম্বন করে আপনার শিশুসন্তানকে খাওয়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারবেন। চলুন জেনে নিই।
ক্ষুধা
বাচ্চাকে দিনে তিন বেলাই খাওয়াতে হবে, এমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম কিন্তু নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি খেতে না চায়, তাহলে তাকে সে সময় খেতে বাধ্য করবেন না। যখন খিদে লাগবে, তখন খেতে দিন।
রুটিন
কোনো নির্দিষ্ট সময়ে শিশুর খাবারের রুটিন হয়ে গেলে সেই সময়ে তার খিদে লাগবে। তাই প্রতিদিনের খাবারের সময় যেন একই সময়ে পরিবেশন করা হয়, তা নিশ্চিত করুন। লক্ষ্য থাকবে, প্রতিদিন তিন বেলার খাবার ছাড়াও দুইবার হালকা নাশতা বা স্ন্যাকসজাতীয় কিছু খাওয়ানো। শিশুকে কী ধরনের স্ন্যাকস দিচ্ছেন, অবশ্যই সেটা খেয়াল রাখতে হবে। মুখরোচক কিন্তু অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস মূল খাবারের সময় খিদে কমিয়ে দিতে পারে।
খাবার পরিবেশন
আকর্ষণীয়ভাবে যদি শিশুর খাবারটি পরিবেশেন করতে পারেন, তাহলে সে খাবারের প্রতি আগ্রহী হবে। শিশুর খাবার পরিবেশনে তাই কিছু ব্যতিক্রম আনুন। এই যেমন সে পাউরুটি খেতে চায় না, প্লেটের ওপর নৌকা বা বাঘের মতো দেখাবে,খেতে আগ্রহী হবে। গোটা ফল খেতে না চাইলে সেটা দিয়ে ফুল, লতাপাতা বানিয়ে খাওয়াতে পারেন। তাই ফল বা সবজি কাটার জন্য কুকি কাটার ব্যবহার করতে পারেন। হামাস বা জেলিতে ডিপিং করেও নানা রকম খাবারের চেহারা বদলে দিতে পারেন।
স্বাদ আবিষ্কার
বিভিন্ন স্বাদের খাবার আবিষ্কারে আপনার সন্তানকে সাহায্য করুন। এতে সে খাবারের ভিন্নতা গ্রহণ করতে শিখবে। কোনো খাবার থাকে রসাল, কোনোটি মাখানো, কোনো খাবার দানাদার, কোনোটা টুকরা করে কাটা। প্রথমে মাখানো বা রসাল স্মুদ টেক্সচারের কোনো খাবার দিয়ে শিশুর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
বিনোদন
বাচ্চা যখন টিভি দেখে বা ফোনে থাকে, তখন তাকে খাওয়ানো একদমই উচিত না। এতে শিশু প্রতিবার খাওয়ার সময় কিছু না কিছু দেখতে চাইবে, পরে যা অভ্যাসে পরিণত হবে। খুঁতখুঁতে বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাসের উন্নতি ঘটাতে চাইলে ভিডিও দেখানোর অভ্যাস বন্ধ করতে হবে। কেননা, টিভি বা ফোনে ভিডিও দেখার সময় বাচ্চার পুরো মনোযোগ পর্দায় থাকে। সে কী খাচ্ছে, তার চেয়ে পর্দায় কী ঘটছে, তার প্রতিই তার মনোযোগ থাকে। তার চেয়ে বরং শিশুর সঙ্গে গল্প করুন। যে খাবারটি খাওয়াচ্ছেন, সেটার পুষ্টিগুণ শিশুর মনের মতো করে বলতে পারেন।
খাবার তৈরি
বাচ্চাদেরও মাঝেমধ্যে বাজারে নিয়ে যাওয়া উচিত। তারা কোন কোন খাবার খাবে, সেটা তাদের পছন্দ করতে দিন। এরপর সবজি কাটাকুটি থেকে শুরু করে রান্না পর্যন্ত তাদের ছোটখাটো কাজে অংশগ্রহণ করতে দিন। এতে তারা শুধু জীবনমুখী কাজগুলোও করতে শিখবে সেসব খাবার খেতেও চাইবে।
ধৈর্য রাখুন
দেখুন, কোনটা তার জন্য ভালো আর কোনটা খারাপ, এটা বোঝার জন্য বাচ্চারা যথেষ্ট পরিপক্ব না। তাই শিশুকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ধৈর্য রাখতে হবে।